জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক প্লাস। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ উপেক্ষা করেই এ কাটছাঁট আনলো শীর্ষ তেল উৎপাদক ও রফতানিকারকদের জোট। নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন কমানোর প্রস্তাব।
এদিকে, বৈঠকের আগেই বাজারে ৩ শতাংশ বেড়েছে জ্বালানি তেলের মূল্য। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে নিশ্চয়ই বৈশ্বিক সংকটের বিষয়টি মাথায় রাখবে ওপেক। খবর রয়টার্স ও এপির।
উল্লেখ্য, অপরিশোধিত তেল উত্তোলন কমানোর বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছিল ওপেক। তবে, সেটি কার্যকর না করতে বারবারই অনুরোধ জানাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো। তাতে অবশ্য মত পাল্টায়নি ওপেক প্লাস। সারা বিশ্বের চাহিদার ৪৪ শতাংশ যোগান দেয় ওপেকভুক্ত দেশগুলো।
বুধবার (৫ অক্টোবর) অস্ট্রিয়ায় বসা জোটের সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও জোটের অন্যতম সদস্য রাশিয়া। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রীও।
ওপেকের মহাসচিব হাইতাম আল ঘাইস বলেন, আমরা জ্বালানি বাজার বিপন্ন করছি না। বরং বাজারে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা করছি। প্রত্যেকটি পণ্যের যেমন মূল্য থাকে; নিঃসন্দেহে জ্বালানি সরবরাহ সুরক্ষিত করতেও ব্যয় হবে অর্থ।
সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান আল সৌদ বলেন, বাজার স্থিতিশীল করাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে সৌদি আরব। কিন্তু জ্বালানি উত্তোলন কাটছাঁটের ইস্যুতে অনেকেই ভাবতে পারেন, আমরা বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে চাই। কিন্তু যোগান আকড়ে না ধরলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। লাগাম টানার এই ফলাফল আগামী কয়েক মাসেই দেখতে পাবে গোটা বিশ্ব। আপাতত বাজারকে একটি নির্দেশনা দিতে চায় ওপেক প্লাস। পরিস্থিতি-প্রয়োজন অনুযায়ী সেটির পরিবর্তন ঘটতে পারে।
এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সিদ্ধান্ত কার্যকরের আগে পুনরায় পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। বলেন, জ্বালানি তেলের বাজার সম্পর্কে সবকিছু স্পষ্ট করেছি ওপেক জোটের সামনে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুধু বাণিজ্যিক সম্পর্ক নেই সৌদি আরবের। বরং বহুমুখী ইস্যুতে আমরা পরস্পরের সাথে সংযুক্ত। তাই শীর্ষ জ্বালানি উৎপাদক ও রফতানিকারক দেশটিকে বলবো, কাটছাঁট আনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে পুনারায় ভাবুন। কারণ, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে টালমাটাল বিশ্ব বাজার। সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের মূল্য নিম্নমুখী রাখতে চলছে সর্বাত্মক চেষ্টা।
এদিকে, তেল উত্তোলন কমানো নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের আগেই বিশ্ববাজারে বৃদ্ধি পায় জ্বালানি তেলের দাম। বুধবার, প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৩ ডলারের মতো বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯২ ডলারে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তোলন কমানোর পদক্ষেপে বাজারে কমবে তেলের সরবরাহ; যার সরাসরি প্রভাব পড়বে দামে।
/এমএন
Leave a reply