ছুটির দিনে ভূমি অফিসের চাবি দালালের দখলে, সদুত্তর নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে

|

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

সরকারি ছুটির দিনে সাতক্ষীরার তালা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অভ্যন্তরে দেখা গেছে দালালের কার্যক্রম। সরকারি কার্যালয়টির চাবি ছিল আলতাফ হোসেন নামের এক দালালের কাছেই। গণমাধ্যমকর্মী দেখেই ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দেন তিনি। এ নিয়ে মুখ খুলছে না ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কেউই।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যমুনা টিভির ক্যামেরায় ধরা পড়ে এ দৃশ্য। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ভূমি অফিসের ভেতরে কাজ করছেন দালাল আলতাফ হোসেন। গণমাধ্যমকর্মী দেখেই অফিসের ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দেন তিনি। বাইরে থেকে বার বার পরিচয় জানতে চাইলেও কোনো উত্তর দেননি আলতাফ।

ছুটির দিনে সরকারি অফিসে দালালের কার্যক্রমের বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করা হয় তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস ও থানা অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফখরুল আলম খানকে। ইউএনও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। এ নিয়ে থানার ওসি বলেন, যেহেতু অফিসটি ইউএনওর আন্ডারে সে কারণে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। এখানে আমাদের কিছু করণীয় নেই।

সরকারি ছুটির দিনে দালাল দিয়ে অফিসের কার্যক্রম করানোর বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ভূমি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, আলতাফ আমার আত্নীয়, শ্যালক। সরকারি অফিসের চাবি তার কাছে কেন? এই প্রশ্নের কোনো উত্তর তিনি দিতে পারেননি। পরে তড়িঘড়ি করে অফিস থেকে আলতাফকে বের করে স্থান ত্যাগ করেন এই ভূমি কর্মকর্তা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউনিয়নের এই ভূমি অফিসটিতে কেউ গেলে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করা যায় না। নামজারি, খাজনা দাখিলার জন্য ১০ হাজার থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। ঘুষ উত্তোলনের কাজ পরিচালনার জন্য আব্দুল গফুর, হাবিবুর রহমান, আলতাফ হোসেন ও অফিসের পিওন শরিফুল ইসলামকে দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ আছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা ঘুষ গ্রহণ ও সাধারণ মানুষদের হয়রানির বিষয়টি তালা ইউএনও প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, এসিল্যান্ড রুহুল কুদ্দুসকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও জানান স্থানীয়রা।

ছুটির দিনে অফিসে দালালের উপস্থিতির বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সরকারি অফিস। এর বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অফিসে কেউ থাকার কথা নয়। দালাল অফিসের কাজ করছে এটা জেনেছি। এটার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, গুরুত্বের সাথে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। সত্যতা পেলে নায়েবের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply