স্টাফ করেসপনডেন্ট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
সভাপতি বলেছেন, তাই মিটমাট করে নিয়েছি। আপনাদের লেখা সংবাদ ঠিকই আছে তবে আমাদের নিজেদের মধ্যে তো, তাই সেরে নিলাম আর কী! সমঝোতার পর মুঠোফোনে কথাগুলো বলছিলেন মারধরের শিকার হামিদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌর মেয়র ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে মারধরের খবর যখন ব্যাপক আলোচনায় এমন মুহূর্তে খবর আসে, মেয়র ও প্রধান শিক্ষক সমঝোতা করেছেন। সোমবার রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায়, মেয়র মোখলেসুর রহমান ও হামিদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবাদলিপি। সেখানে বলা হয়েছে, একটি বিছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অতিরঞ্জিত। একটি মহল শিক্ষক সমাজের সাথে মেয়র মহোদয়ের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি ও সম্মানহানির উদ্দেশ্যে যে অপপ্রচার চালিয়েছে তাতে আমরা উভয়ই বিব্রতবোধ করছি এবং যৌথভাবে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এদিকে, মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকালে প্রধান শিক্ষকের একটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিপটিতে প্রধান শিক্ষক নিজে তাকে মারধরের ঘটনা বর্ণনা করছেন। বিষয়টি নিয়ে ওই ফেসবুকের ওই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা বলেন, এই ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ বানানোর পাশাপাশি ভয়ের একটা সংস্কৃতি তৈরি করা হলো। আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাবে কিন্তু বিচার চাওয়া যাবে না এবং পরিশেষে সমঝোতা করতে বাধ্য করা হবে বলে তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম যমুনা নিউজকে বলেন, নিজেদের মধ্যে ঘটনা এবং সভাপতি সাহেব বলেছেন, তাই মিটমাট করে নিয়েছি। তবে তাকে মারধরের ঘটনা সত্য বলে পুনঃনিশ্চিত করেন তিনি। যৌথ প্রতিবাদলিপিতে প্রকাশিত সংবাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অতিরঞ্জিত কেন লিখলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি সত্যি বলেছি, আপনারা (সাংবাদিকরা) সত্য লিখেছেন। প্রতিবাদলিপিতে এসব লিখতে হয় তাই তারা লিখেছে।
প্রসঙ্গত, স্কুলের নকলবাজ দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করায় দুইজন কাউন্সিলরসহ পৌর মেয়র ওই দুই ছাত্রের পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য তদবির করেন। এতে প্রধান শিক্ষক রাজি না হলে তাকে মেয়র মোখলেসুর রহমান তার দলবল নিয়ে ১৬ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে ঢাকা বাস্ট্যান্ডে তাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম। এই নিয়ে যুমনা নিউজ অনলাইনে ১৬ অক্টোবর নকলের দায়ে দুই ছাত্রকে বহিষ্কার, প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক।
/এডব্লিউ
Leave a reply