ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগ করেছেন

|

বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস।

নানা টানাপোড়েনের পর দায়িত্ব গ্রহণের ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) তার সরকারি বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।

ট্রাস জানান, কনজারভেটিভ পার্টির যে মান্ডেট নিয়ে আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম তা আমি পালন করতে পারছি না। আমি মহামান্য রাজাকে বিষয়টি জানিয়ে বলেছি যে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে আমি পদত্যাগ করতে যাচ্ছি। বরিস জনসনের নেতৃত্ব নিয়ে বহু বিতর্কের পর গত মাসেই ক্ষমতায় আরোহন করেন লিজ।

এক সপ্তাহেরও কম সময়ে দুই বিশ্বস্ত মন্ত্রীর পদত্যাগে বেকায়দায় পড়েন লিজ ট্রাস। বুধবার (১৯ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধীরা রীতিমতো তুলোধুনো করেন ট্রাসকে। দলীয় সদস্যদের তোপেও নাজেহাল হতে হয় তাকে। এদিন প্রকাশ্যেই নজিরবিহীন বাক-বিতণ্ডায় জড়ান ক্ষমতাসীন টোরি দলের এমপিরা। বিরোধীরাও প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন প্রধানমন্ত্রীকে।

বিরোধী নেতা স্যার কেইর স্টার্মার বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত সপ্তাহে প্রতিটি প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন। লেবারদের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের পরিকল্পনা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কী? দুঃখপ্রকাশ! এখন কি আমরা অর্থনৈতিক বিপর্যয় মেনে নিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেবো? যে অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছেন, লেজে গোবরে অবস্থার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তা।

ছয় সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে গ্রান্ট শেপসকে বরখাস্ত করেছিলেন লিজ ট্রাস। পরিস্থিতির ফেরে তাকেই ফিরিয়ে আনতে হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে। অথচ দলীয় প্রধান নির্বাচনের সময় লিজ ট্রাসের বিরোধিতা করেছিলেন শেপস। সেসময় অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টও সমর্থন দিয়েছিলেন ঋষি সুনাককে।

মূলত, অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা নিয়ে চাপের মুখে পড়েন ট্রাস। বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ‘মিনি বাজেট’ পরিকল্পনা থেকেও সরে আসতে হয় ট্রাসকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ভুল স্বীকারও করেছি। যেটা জরুরি ছিল পরিকল্পনা পরিবর্তন। সেটা কিন্তু করেছি। দায়িত্বে আছি মাত্র দেড় মাস। এরইমধ্যে ইন্স্যুরেন্স বৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছি। সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বাড়তি। আমরা বরং সৎভাবে সমন্বয়ের চেষ্টা করছি। আমি ময়দান ছেড়ে পিছু হটা নয়, লড়াইয়ে বিশ্বাসী।

কর ছাড়ের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন লিজ ট্রাস, শুরুতেই ধাক্কা খায় তা। বাড়তি তহবিলের যোগান কোথা হতে হবে তা ছিল না ট্রাসের সংক্ষিপ্ত বাজেটে। টানাপোড়েনের জেরে নতুন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই ট্রাসের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রায় পুরোটাই বাতিল করে দেন জেরেমি হান্ট। নিজের পরিকল্পনায় ভুল ছিল বলে দায় স্বীকারের পর এবার প্রধানমন্ত্রী ও টোরি পার্টির প্রধানের দায়িত্ব থেকেই সরে যেতে হলো ট্রাসকে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply