সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নাটোর:
নাটোরের গুরুদাসপুরে নির্যাতনের শিকার কুলসুম বেওয়া নামে ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে, নাটোরের গুরুদাসপুরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কুলসুম বেওয়া নামে এক বৃদ্ধাকে দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার পমপাথুরিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে। ভুক্তভোগী কুলসুম একই এলাকার মৃত সুরত আলীর স্ত্রী।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বৃদ্ধা ও তার মেয়ে জামাইকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১ এ হাজির করা হয়। পরে আদারতের বিচারক আশরাফুন্নাহার রীটা তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: মিথ্যা অপবাদে বৃদ্ধাকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ
ভুক্তভোগী বৃদ্ধা জানান, তার স্বামী অনেক দিন আগে মারা গিয়েছেন। তার চার মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। মেঝো মেয়ে রফেলা বিয়ের পর থেকেই তার বাসায় জামাইসহ বসবাস করে আসছে। মঙ্গলবার তার শরীরে হঠাৎ জ্বর আসে। তাকে অসুস্থ দেখে তার মেয়ে জামাই আবুল কাশেম বাজারে গিয়ে ওষুধ কিনে নিয়ে এসে তার ঘরে প্রবেশ করে। এরপর রতন ও উজ্জ্বল নামে দুই প্রতিবেশী যুবক হইচই করতে থাকে। তারা লোকজন জড়ো করে অপবাদ দেয় যে, তিনি তার জামাইয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন। এ কথা বলার পরেই দুই যুবক তাকে টেনে হিচড়ে বাইরে বের করে একটি ডাব গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং তাকে ও তার মেয়ে জামাইকে মারধর করে।
এ ব্যাপারে বৃদ্ধার মেয়ে রফেলা বেগম জানান, অসুস্থ থাকায় তিনি বনপাড়া ক্লিনিকে ছিলেন। তার মায়ের জ্বর হওয়ায় তার স্বামী ঔষধ এনে তার মাকে ডেকে ঔষধ খেতে বলেন। এ সময় তার স্বামী ও মাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করে পুলিশ ডেকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। যারা এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী মুক্তার হোসেন বলেন, ৭৫ বছর বয়সী কুলসুম বেওয়া ও তার জামাতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে এই মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর তাদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নিতেই স্থানীয় লোকজন এই মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। সেই সাথে পুলিশও নির্যাতনকারীদের কথা শুনে গণউপদ্রব আইনে মামলা করে তাদের আদালতে প্রেরণ করেছে।
জেলা মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি সোহেল রানা বলেন, কেউ অপরাধ করলে সেজন্য কোর্ট আছে, আইন আছে। কিন্তু তাকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। তারা ভিকটিমের পাশে থাকবেন এবং যা করণীয় তা করবেন।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঐ বৃদ্ধা ও তার মেয়ে জামাইকে আটক করে গণউপদ্রব আইনে মামলা দায়ের করে তাদের সিনিয়র জুডিশায়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুন্নাহার রীটার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। যারা আইন হাতে তুলে বৃদ্ধাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করলো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলো না কেন? এমন প্রশ্নে ওসি জানান, ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
/এনএএস
Leave a reply