গণসমাবেশকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দিতে চায় বিএনপি

|

শরিফুল ইসলাম খান:

বিভাগীয় কর্মসূচির উত্তাপ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চায় বিএনপি; গণসমাবেশকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে সাংগঠনিক সভাসহ নানা ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে দলটি। নেতারা জানান, যতো প্রতিকূলতাই আসুক রাজপথ ছেড়ে যাবে না বিএনপি। বাধা আসলেও ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বড় শোডাউন করে সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চায় দলটি। বিএনপি নেতারা জানান, মানুষ রাস্তায় নেমে জীবন দিতে শিখেছে, তাই ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না।

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম থেকে বিভাগীয় সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। এরপর ময়মনসিংহ আর খুলনাতে এ কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। প্রতিটি সমাবেশ ঘিরেই রাজনৈতির মাঠে ছড়িয়েছে এক ধরনের উত্তেজনা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করেই সমাবেশে যোগ দেন কর্মী-সমর্থকরা। তৃণমূল নেতাকর্মীদের এ মনোভাবেকে আরও চাঙ্গা রাখতে চায় বিএনপি। গণসমাবেশের আবহকে কাজে লাগিয়ে গণঅভ্যুত্থানের পথে হাঁটতে চায় বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, গণসমাবেশগুলো যখন আমরা সফলভাবে শেষ করবো তখন এই গণসমাবেশের মাধ্যমেই গণঅভ্যুত্থান তৈরি হবে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটবে ইনশাআল্লাহ।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, গণসমাবেশ থেকে গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে। এতো বাধা, এতো মারধর, রাস্তা বন্ধ করে রাখার পরেও মানুষ তো কম হচ্ছে না। এর অর্থ হলো, এদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়।

নেতাদের দাবি, ভয়কে জয় করে রাজপথে নেমে এসেছে মানুষ। গুলি কিংবা হামলা-মামলার মুখেও পিছু হটছেন না দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। তাই, বাধা আসলেও ডিসেম্বরে রাজধানীতে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি।

ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ঢাকা মহানগরে যে সমাবেশ হবে তা মহাসমাবেশে পরিণত হবে। যেখানেই বাধা আসবে আমরা সেখানেই প্রতিরোধ করবো। দাবি আদায় না করে আমরা কেউ ঘরে ফিরবো না। আমাদেরকে যদি রক্ত দিতেও হয় তবে আমরা রক্ত দিতেও প্রস্তুত আছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যেই আমাদের ৫-৬ জন নেতাকর্মীর মৃত্যু ঘটেছে। বাকিরা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে রাস্তায় নামছে, গুলিকে উপেক্ষা করছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আজকে জনগণ জীবন দিতে প্রস্তত হয়ে গেছে। যে মানুষগুলো জীবন দিতেও প্রস্তুত তাদেরকে আপনি থামাবেন কী করে?

একদিকে রাজপথে আন্দোলন, অন্যদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপও করছে বিএনপি। সুশীল সমাজ ও পেশাজীবীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি বাড়িয়েছে কূটনৈতিক তৎপরতা। সব মিলিয়ে এবারের আন্দোলনের ব্যাপারে আশাবাদী বিএনপির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুধু কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন না। এটি একটি সামাজিক আন্দোলনও বটে। এতে বিভিন্নভাবে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে, সুশীল সমাজ-সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ বারবার জয়ী হয়েছে, এবারও জয়ী হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, এই মিটিংগুলো কিন্তু সরকারকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে- আমরা আর তোমাদেরকে চাই না। যে আন্দোলনগুলো আমরা করেছি, তার সফলতাই প্রমাণ করে যে জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে। এবং এ জনগণই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিজেদের সরকার গঠন করবে।

জানা গেছে, ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার আল্টিমেটাম দেয়া হবে, সময়সীমা অতিক্রম করলেই বদলে যাবে আন্দোলনের ধরন

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply