ব্রাজিলের ক্ষমতায় ফিরলেন লুলা ডি সিলভা

|

ফল ঘোষণার পর সমর্থকদের সাথে লুলা ডি সিলভা।

ব্রাজিলের রাজনীতিতে নাটকীয় পট পরিবর্তনে আবারও দেশটির ক্ষমতায় বামপন্থী নেতা লুলা ডি সিলভা (৭৭)। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে চরম ডানপন্থী জেইর বলসোনারোকে হারান বর্ষীয়ান এ নেতা। সাফল্য নিশ্চিতের পর লুলা জানান- সামাজিক অবক্ষয় রোধ এবং পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করবে তার সরকার। শুধু তাই নয়, ব্রাজিলে ফিরিয়ে আনা হবে দেশটির স্বর্ণোজ্জ্বল ঐতিহ্য। এদিকে, জয়ের পর লুলা ডি সিলভাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য বিশ্ব নেতারা।

এভাবেও ফিরে আসা যায়, ২০ বছর পর আবারও ক্ষমতার মসনদ জয় করে সেটিই প্রমাণ করলেন লুলা ডি সিলভা। তাই উচ্ছাস যেনো বাঁধ ভেঙ্গেছে বর্ষীয়ান এ নেতার সমর্থকদের। তারা এ জয়কে স্বৈরশাসন ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে বিজয় বলে অভিহিত করছেন।

এর আগে, নির্বাচনের ১ম দফায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো এগিয়ে থাকলেও কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের কোটা পার করতে পারেননি। ফলে দ্বিতীয় দফায় গড়ায় ভোটাভুটি। চূড়ান্ত ফলাফলে লুলা ডি সিলভা পেয়েছেন পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৫৩ শতাংশ ভোট। আর বলসোনারো ৪৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ ভোট।

এক প্রতিক্রিয়ায় ব্রাজিলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা বলেন, ব্রাজিলের রাজনৈতিক সংস্কারের জন্যেই ফিরে আসা। এটা আমার বা দলীয় জয় নয়; বরং, গণতান্ত্রিক চর্চার সাফল্য। যা, রাজনৈতিক পার্টি, মতাদর্শ বা ব্যক্তি পরিচয়ের বহু ঊর্ধ্বে। সংকটময় মুহূর্তে দেশের হাল ধরছি। প্রত্যাশা, আম জনতার সহযোগিতায় ব্রাজিলে গণতন্ত্র-শান্তি ও সাম্যের সমাজ ফিরিয়ে আনা।

মাত্র তিন বছর আগেও তিনি ছিলেন কারাগারে। ‘অপারেশন কারওয়াশ’ মামলায় তাকে শোনানো হয় ২৫ বছরের সাজা। সে সময়, অনেকেই ভেবেছিলেন; লুলা ডি সিলভার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ। অবশ্য গত বছরের মার্চেই, নির্দোষ সাব্যস্ত হন বামপন্থী এ নেতা। সব ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারিতে ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন লুলা।

ব্রাজিলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা বলেন- বর্ণবাদ, কুসংস্কার এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিরলস লড়াই করে যাবো আমি। আমার মুল লক্ষ্য- ব্রাজিলকে তার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেয়া। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, পরিবেশ রক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবো আমি।

লুলা ডি সিলভার জয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য বিশ্ব নেতারা। তবে, মনে করা হচ্ছে দুই শিবিরে বিভক্ত ব্রাজিলকে ঐক্যবদ্ধ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে লুলার জন্য।

প্রসঙ্গত, নানা ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জেরে গেল চার বছর ধরে বারবার সমালোচনার মুখে পড়েন জেইর বলসোনারো। অভিযোগ, তার গৃহীত নীতিমালা শুধুই সমাজের উচ্চ শ্রেণীর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট। তার বির্তকিত উদ্যোগের কারণেই ১০ ভাগ ব্রাজিলীয়র হাতে ৯০ ভাগ সম্পদ। আমাজন বনাঞ্চল ধ্বংস করে শিল্প-কারখানা নির্মাণের অনুমোদন দিয়ে বিশ্বজুড়েই সমালোচনার ঝড় তোলেন বলসোনারো।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply