সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় রেদোয়ার আহমেদ রাজু নামে চৌদ্দ বছর বয়সী এক কিশোরকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার মায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মা লিপি বেগমকে পুলিশ আটক করেছে।
নিহত রাজু স্থানীয় একটি স্ক্রিন প্রিন্টের কারখানায় কাজ করতো। গত সাত মাস আগে কর্মস্থলে অনিয়মিত হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, দেওভোগ বেপারিপাড়া এলাকার রাজমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বেগমের মধ্যে দাম্পত্য জীবনে বনিবনা না হওয়ায় গত দশ-বারো বছর আগে তাদের মধ্যে তালাক হয়। এরপর থেকে রাজু ও তার বড় ভাই মায়ের সাথে একটি ফ্ল্যাট বাসায় ভাড়া থাকতো। রোববার (১৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের ফ্ল্যাট থেকে কান্নাকাটির শব্দ ও আগুনের ধোঁয়া দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী ছুটে যায়। গিয়ে দেখতে পায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাজুর শরীর আগুনে ঝলসে গেছে এবং সে বারান্দায় কাতরাচ্ছে। খবর পেয়ে রাজুর বাবা ও তার নিকট আত্মীয়-স্বজনরা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। দীর্ঘ পাঁচদিন সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে রাজুর মৃত্যু হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাজুর মাকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে সদর থানা পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে থেকে নিহত রাজুর মা লিপি বেগমকে আটক করে।
তবে রাজুর মৃত্যুর বিষয়ে এলাকাবাসী ও স্বজনদের মধ্যে নানা মত সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন, রাজুর মায়ের পরকীয়া সম্পর্ক দেখে ফেলায় তার মা তাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। আবার কেউ বলছেন, রাজু দীর্ঘ সাত মাস যাবত কাজে না যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মা তাকে হত্যা করেছে।
তবে রাজুর মায়ের পরিবারের দাবি, কারখানার চাকরি চলে যাওয়ায় মা বকাঝকা করায় রাজু আত্মহত্যার উদ্দেশে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে।
এ ঘটনায় ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার দাবি করে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিহত রাজুর বাবা আনোয়ার হোসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এটিএম/
Leave a reply