দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ শীতকাল পার করছে ইউক্রেন। রুশবহরের বিরতিহীন হামলায় বিপর্যস্ত দেশটির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। দেশের ৫০ ভাগের বেশি মানুষের চাহিদা মেটাতে পারছে না সরকার। খোদ রাজধানীতেই ৭০ শতাংশ বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন। এই জনদুর্ভোগের মধ্যেও সামরিক অভিযান বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। উল্টো প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছেন, সেনাদের জন্য আরো উন্নতমানের অস্ত্র পাঠাচ্ছে ক্রেমলিন। খভর ডয়েচে ভেলের।
ইউক্রেনজুড়ে যখন মিসাইল-গোলাবারুদের বর্ষণ; সেসময় কিয়েভের হার্ট ইন্সস্টিটিউশনে চলছে জটিল অস্ত্রোপচার। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছোট্ট এক শিশুর হার্ট অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করলেও, প্রাণে বেঁচেছে শিশুটি- এমনটা জানিয়েছে হাসপাতাল।
রাশিয়ার ক্রমাগত হামলার কারণে ইউক্রেনে তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যেও বিদ্যুৎহীন কয়েক লাখ পরিবার। গরম পানি সহ শীতকালীন কোনো সুবিধা বা মৌলিক চাহিদাও মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে দেশবাসীর জন্য কয়েক হাজার বিশেষ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে জেনারেটরের পাশাপাশি রাখা হয়েছে গরম পানি, হিটিং সিস্টেম ও চার্জিং সুবিধা।
এ নিয়ে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ,পানি এবং যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। তবে কিয়েভসহ ১৫টি অঞ্চলে কাজটা বেশ কঠিন। কারণ, রাজধানীতে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে ৮০ ভাগ বাসিন্দা। জরুরি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দেশজুড়ে ৪ হাজার ৩৬২টি বিশেষ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এগুলো তীব্র ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করবে জনগণকে।
ইউক্রেন এ পরিস্থিতিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ আখ্যা দিলেও তা তোয়াক্কা করছে না রাশিয়া। উল্টো ফ্রন্টলাইনে সমরাস্ত্রের সরবরাহ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার বক্তব্য, মস্কোর দাবিগুলো মেনে নিয়ে জনদুর্ভোগ কমাতে পারে কিয়েভ।
পুতিন বলেন, সমন্বয়ের মাধ্যমে সামরিক অভিযানের লক্ষ্য পূরণ করা হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে শুধু অস্ত্রের মজুদ বৃদ্ধি করাই শেষ কথা নয়, এগুলোর মানও বাড়াতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব ধরনের সুযোগ রাখা হয়েছে টেবিলে। রাশিয়ার দাবিদাওয়া মানলেই, জনদুর্ভোগ কমাতে পারে ইউক্রেন।
এর আগে, বুধবারও (২৩ নভেম্বর) ইউক্রেনজুড়ে ৭০টি ক্রুজ মিসাইল ছোড়ে রুশ সেনাবহর। তাতে প্রাণ যায় কমপক্ষে ১০ জনের। বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র মলদোভাও। অক্টোবর থেকেই ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে টার্গেট করে আসছে রুশ বাহিনী। বিশ্লেষকদের মতে, সমঝোতার জন্য ইউক্রেনের ওপর চাপ তৈরি করাই এ রণকৌশলের উদ্দেশ্য।
এসজেড/
Leave a reply