‘রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনের হামলা মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা’

|

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার পর হঠাৎই নতুন মোড় দিয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি। রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনের হামলাকে মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা বলছেন বিশ্লেষকরা। কিয়েভের সামরিক সক্ষমতা নিয়েও চলছে আলোচনা। অন্যদিকে, প্রশ্ন উঠেছে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও। খবর রয়টার্সের।

অন্তত তিন দশক আগে রুশ সামরিক বাহিনী থেকে বাতিল করে দেয়া হয় টিইউ-১৪১ সিরিজের সব ক্ষেপণাস্ত্র। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়ায় অভিযান চলাকালে এসব ক্ষেপণাস্ত্রই সংস্কার করে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী। বাতিল আর পুরনো এসব ক্ষেপণাস্ত্রই এখন মাথা ব্যাথায় পরিণত হয়েছে রাশিয়ার। মঙ্গলবার ড্রোন দিয়ে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ফেলেই রুশ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ইউক্রেন।

এ প্রসঙ্গে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহনাত বলেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলার জন্য ব্যবহৃত হতো এই তিন বিমানঘাটি। এতে আমাদের সফল হামলায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে একাধিক রুশ বোমারু বিমানের। ধ্বংস করা হয়েছে অবকাঠামোগতভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও। এতে ইউক্রেনে রুশ হামলার পরিধি অনেক কমে আসবে বলে আমরা আশা করছি।

প্রায় ৪৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এসব ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র ঘণ্টায় ছুটতে পারে প্রায় ৭শ মাইল গতিতে। নিঁখুত আঘাত হানতে সক্ষম ৬শ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও। স্যাটেলাইটের ছবিতেই স্পষ্ট হামলায় কত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রুশ বিমান বাহিনীর। এস-৪০০, এস-৩০০ এর মতো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকার পরও তিনটি রুশ বিমান ঘাটিতে কীভাবে পুরোনো এসব ড্রোন হামলা চালালো তাই নিয়ে এখন চলছে নানান জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়েও।

এ প্রসঙ্গে ক্লিনটন ইন্সটিটিউটের রাজনীতি বিশ্লেষক স্কট লুকাস বলেন, ইউক্রেন এমনভাবে ড্রোনের আধুনিকায়ন করেছে যে তা দিয়ে রুশ ভূখণ্ডেও হামলা করা সম্ভব। এবং এতে তারা সফলও হয়েছে। এতোদিন ইউক্রেনের ভেতরে থাকা রুশ অবস্থানে হামলা করে আসছিলো জেলেনস্কির সেনারা। কিন্তু, এবার সরারসি রুশ ভূখণ্ডে হামলা করছে ইউক্রেন এবং তা ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যুদ্ধে হঠাৎ এ ধরনের পরিবর্তন মস্কোর জন্য নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা।

এদিকে, রাশিয়ায় হামলার ক্ষেত্রে পশ্চিমা সহায়তা নিয়ে চলছিলো নানা জল্পনা। তবে ওয়াশিংটন স্পষ্ট করলো, ইউক্রেনকে সীমান্তের বাইরে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে কোনো ইন্ধন যোগায়নি যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনবাসীকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইউক্রেন সীমান্তের বাইরে অন্যকোনো ভূখণ্ডে হামলার জন্য কিয়েভকে কোনো ধরনের সহায়তা করেনি ওয়াশিংটন। বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগতও নই।

এর আগে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়- ড্রোনের আঘাতে নিহত হয়েছে তিন রুশ সেনা। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দুটো সামরিক বিমান।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply