ইরান এখন রুশ সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী- এমন মন্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছে হোয়াইট হাউজ। গোয়েন্দাদের বরাতে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কারবির দাবি, মস্কোকে ড্রোন ও মিসাইল সরবরাহ করে তেহরান। বিনিময়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে বড় ধরনের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে পুতিন প্রশাসন। কারবির মতে, দু’দেশের সামরিক অংশীদারিত্ব কেবল ইউক্রেনের জন্য নয়; ইরানের প্রতিবেশিদের জন্যও হুমকি। খবর রয়টার্সের।
বেশ কিছুদিন ধরেই ইউক্রেন ও পশ্চিমারা দাবি করছে, চলমান যুদ্ধে ইরানের ‘শহীদ’ ড্রোন ব্যবহার করছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দাবি, ড্রোনের পাশাপাশি মস্কোকে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে তেহরান।
বিনিময়ে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, হেলিকপ্টার, ফাইটার জেটসহ ইরানকে সর্বাধুনিক অস্ত্র সহায়তা দেবে রাশিয়া। এরইমধ্যে, তেহরানের সেনাদের সুখয় থার্টি ফাইভ বিমান পরিচালনার প্রশিক্ষণও দিয়েছে মস্কো। সব মিলিয়ে রাশিয়া-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ‘পূর্ণ সামরিক অংশীদারিত্বমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্টের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, এ দুই দেশ পুরোপুরি সামরিক অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এ সমঝোতা কেবল ইউক্রেনের জন্য নয়, ইরানের প্রতিবেশিদের জন্যও হুমকি তৈরি করবে।
এর আগে, শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও ওঠে রাশিয়া-ইরান সামরিক সম্পর্কের ইস্যু। যুক্তরাজ্যের দাবি, ইউক্রেনে বেসামরিকদের হত্যা, বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংসে ব্যবহার করা হয়েছে তেহরানের ড্রোন।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান থেকে আরও কয়েকশ ড্রোন ও ব্যালেস্টিক মিসাইল নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে রাশিয়ার। এমনকি উত্তর কোরিয়াকে অস্ত্রের বিকল্প উৎস হিসেবে রেখেছে মস্কো।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি বারবারা উডওয়ার্ড বলেন, গত আগস্ট থেকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে মস্কোকে কয়েকশ’ ড্রোন ও মিসাইল দিয়েছে তেহরান। নিজেদের মজুদ শেষ হয়ে আসায়, উত্তর কোরিয়ার কাছেও অস্ত্রের উৎস খুঁজছে পুতিন প্রশাসন।
এর জবাবে, নিজেদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন রুশ প্রতিনিধি।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে রুশ প্রতিনিধি ভাসিলিয়া নেবেনজিয়া বলেন, আমি জানি সব দোষ রাশিয়ার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হবে। ইরান থেকে রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহ প্রসঙ্গ তোলা হবে। যা নিয়ে অনেকবার বলেছি। রাশিয়ার সামরিক ইন্ডাস্ট্রি খুব ভালোভাবে কাজ করছে, অন্য কারো সহায়তা প্রয়োজন নেই। আর ইউক্রেনের সামরিক ইন্ডাস্ট্রি বলতে কিছু নেই। পুরোটাই পশ্চিমাদের সহায়তাপুষ্ট। আর পশ্চিমারাও সেখান থেকে মোটা অংকের মুনাফা পায়।
গত মাসে মস্কোকে ড্রোন সরবরাহের কথা স্বীকার করেছে তেহরান। অবশ্য দাবি করা হয়, যুদ্ধের আগেই পাঠানো হয়েছে সেগুলো।
/এসএইচ
Leave a reply