অভিবাসী শব্দটা কখনই সহজভাবে নিতে পারেনি ইউরোপের দেশগুলো। কিন্তু সেই অভিবাসী ফুটবলাররাই আজ বিশ্বকাপে দাপট দেখাচ্ছে। এবারের আসরে বিভিন্ন দেশের হয়ে খেলছে ৮২ জন অভিবাসী ফুটবলার। যারা জন্মভূমির হয়ে না খেলে লড়ছেন বিশ্বকাপের বিভিন্ন দেশের হয়ে। আর এই ৮২ ফুটবলারের ৫০ জনেরই জন্ম বা বেড়ে ওঠা ফ্রান্সে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ ফুটবলারের জন্ম ব্রাজিলে।
১৯৯৮ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে ফ্রান্স। আর বিশ্বকাপজয়ী সেই ফ্রান্স দলে জিদানসহ ৫ জন ছিলেন অভিবাসী ফুটবলার। নানা রং ও জাতির ফুটবলার হওয়ায় সেই দলটিকে বলা হতো দ্য রেইনবো টিম।
২০ বছর পর আবারো বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স। এবারো দলটির কাণ্ডারির ভূমিকায় সেই অভিবাসী ফুটবলাররাই। এমবাপ্পে, মাতৌদি, কন্তেসহ ৫ ফুটবলার আছেন ফ্রান্সের শুরুর একাদশে। আর ২৩ সদস্যের স্কোয়াডের ১৬ জনই অভিবাসী। তারা কেউ সরাসরি অভিবাসী, কেউবা বাবা-মা সূত্রে। আর ফ্রান্স শাসিত ক্যারিবীয় দ্বীপে জন্ম নেয়া দুই ফুটবলার আছেন এই দলে।
এদিকে ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসী ফুটবলারের তালিকাটা বেশ লম্বা। এই যেমন সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়া বেলজিয়াম দলের ১১ ফুটবলারই অভিবাসী। রোমেলু লুকাকু, ফেলাইনি, ভিনসেন্ট কোম্পানীদের মুল পরিচয় অভিবাসী। লুকাকু, কোম্পানীদের আদি ভূমি কঙ্গোতে। বা-মার অভিবাসী হওয়ার সূত্রে আজ তারা বিশ্ব মাতাচ্ছেন বেলজিয়ামের জার্সি গায়ে।
সেমিফাইনাল থেকে বিদায় ইংলিশ শিবিরেও রয়েছে অভিবাসী ফুটবলারদের আধিক্য। দলটির ৬ জন খেলোয়াড়ের বাবা-মা অভিবাসী। যার মধ্যে চার খেলোয়াড়ের রয়েছে আফ্রো-ক্যারিবীয় বংশ পরিচয়। দলটির উদীয়মান ফরোয়ার্ড রহিম স্টারলিং এর জন্ম যেমন জ্যামাইকায়।
আর সেনেগাল, পর্তুগাল, মরক্কো ও তিউনিশিয়ার হয়ে বিশ্বকাপ মাতিয়েছেন প্যারিসে জন্ম নেয়া অভিবাসী ফুটবলাররা।
আফ্রিকা বা ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে এসে এসব অভিবাসী ফুটবলাররা ইউরোপের ঝাণ্ডা উঁচিয়ে ধরলেও তাদের অতীতটা মোটেই সুখকর ছিলো না। মূলত গত শতাব্দীতে শ্রমিক হিসেবে আসা এসব অভিবাসীদের মেনে নিতে পারেনি ফ্রান্স বা বেলজিয়ামের ফুটবলাররা। কিন্তু যোগ্যতা ও পারফরমেন্সেই জয়রথ চলছে অভিবাসী ফুটবলারদের।
Leave a reply