মেসির সতীর্থ থেকে আর্জেন্টিনার কোচ, স্কালোনির পথচলায় ছিল বহু বাধা-চ্যালেঞ্জ

|

মেসি-ডি মারিয়া-আলভারেজদের ছন্দময় ফুটবল মুগ্ধ করছে পৃথিবীর কোটি কোটি ভক্তকে। মাঠে তারা গোল করছেন, ভীতি ধরাচ্ছেন প্রতিপক্ষের মনে। এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পেছনের অন্যতম নায়ক কোচ লিওনেল স্কালোনি। ২০০৬ এর বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন মেসিরই সতীর্থ। মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচে দুইজন একসাথেই খেলেছেন। মেসি এখনো ছুটছেন অবিরাম, আর খেলোয়াড়ি পাঠ চুকিয়ে স্কালোনি এখন মেসিরই কোচের ভূমিকায়।

২০১৮ বিশ্বকাপে হোর্হে সাম্পাওলির অধীনে ভরাডুবি হয় আর্জেন্টিনার। রাউন্ড অব সিক্সটিনে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় আলবিসেলেস্তাদের। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত মেসি তো একবার অবসরের ঘোষণাই দিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেই সময়টাতে ত্রাতারূপে আবির্ভাব হয় স্কালোনির। সাম্পাওলিকে সরিয়ে কোচ হিসেবে দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় স্কালোনির হাতে। স্কালোনির কোচিং ক্যারিয়ারও শুরু হয়েছিল হোর্হে সাম্পাওলির সহকারী কোচ হিসেবে।

সে সময় বিশ্বকাপে বাজে পারফরমেন্সের জন্য চাপ তো ছিলই, সাথে ছিল আর্জেন্টিনা বোর্ডের অর্থস্বল্পতাও ছিল বড় ইস্যু। বেশি বেতন দিয়ে তখন কোচ রাখার সামর্থ্য ছিল না তাদের। চরম দুঃসময় যখন ঘিরে ফেলেছে চারদিক, তখনই যেন ত্রাতা হয়ে হাজির স্কালোনি। এএফএ ঠিক করে ফেললো, অন্তবর্তীকালীন কোচ হবেন তিনিই।

দায়িত্ব নিয়েই স্কালোনি মেসিকে ফেরালেন, ফেরালেন পুরনো আর্জেন্টিনার স্মৃতি, এক সুতোয় গাঁথলেন পুরো দলটাকে। নির্ভার মেসি খেললেন ক্যারিয়ারের সেরাটা, তাতেই আট বছর বাদে বিশ্বকাপের ফাইনালে আলবিসেলেস্তেরা। মেসির সেরাটা বের করে আনার পেছনের কারিগর আর্জেন্টিনার এই কোচ।

স্কালোনির হাতে গুরুদায়িত্ব তুলে দেয়ায় নাখোশ ছিলেন অনেক খেলোয়াড় থেকে সতীর্থরাও। অনেকে চেয়েছিলেন নিয়ম ভেঙে স্থানীয় কোচ ছেড়ে বাইরের কোচ আনতে। চাপের মুখে দায়িত্ব নেয়া স্কালোনির জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জ বেশ ভালোভাবেই উতরে যান এই আর্জেন্টাইন। আর্জেন্টিনা থেকে ইতালি, স্পেন থেকে ফ্রান্স, এমনকি নেদারল্যান্ডস কোনো আর্জেন্টাইন আশা নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখাতে পারলেই তাকে দলে ডেকেছেন স্কালোনি। খেলোয়াড়দের সুযোগ দিয়েছেন, সময় দিয়েছেন দলের সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য। আর তাতেই তিনি সফল।

এরপর তার অধীনেই ২০২০ সালে ব্রাজিলকে তাদের মাটিতে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জয় করে আলবিসেলেস্তারা। ২৮ বছর পর প্রতীক্ষার পর অধরা শিরোপা ধরা দেয় তাদের হাতে। এরপর ইতালিকে হারিয়ে ফিনালিসিমা শিরোপাও নিজেদের করে নেয় স্কালোনির শিষ্যরা।

আট বছর পর আবারো ফাইনালে আর্জেন্টিনা। সামনে হাতছানি আছে ৩৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিরোপা জয়ের। সৌদি আরবের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু হলেও দারুণ ছন্দে এখন আলবিসেলেস্তারা। শেষ ৪২ ম্যাচের মাত্র এক ম্যাচে হারা দলটার সাফল্যের নেপথ্যের নায়ক সে লিওনেল স্কালোনিই।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply