মেসির অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেয়া হতে পারে সুপার ব্যালন ডি’অর

|

ছবি: সংগৃহীত

খেলোয়াড়ি জীবনে কোনো কিছুরই কমতি ছিল না লিওনেল মেসির। সাতবারের ব্যালন ডি’অর চ্যাম্পিয়নের ঝুলিতে অজস্র ক্লাব ফুটবলের স্বীকৃতিসহ আছে কোপা ও ফিনালিসিমা জয়ের কীর্তি। এতসব অর্জনের পরও একটা শূন্যতা অবশ্য ছিল এলএমটেনের। বিধাতা দুই হাত ভরে যাকে এতকিছু দিয়েছেন, তার মনে শুধু ছিল একটা বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ। তবে, ভাগ্যবিধাতা যেন আগে থেকেই লিখে রেখেছিলেন সব। আরও একবার অর্জনের দিক দিয়ে রেকর্ড গড়তে পারেন মেসি। ইতিহাসের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে এই আর্জেন্টাইন ফুটবল বিস্ময় জিততে পারেন সুপার ব্যালন ডি’অর।

পুরস্কারটির নাম অনেকের কাছেই কিছুটা অপরিচিত ঠেকতে পারে। তবে যখন জানা যাবে, সুপার ব্যালন ডি’অর এর আগে মাত্র একবারই দেয়া হয়েছিল আর, একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে সেটা জিতেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি আলফ্রেডো দি স্টেফানো; তখন নিশ্চয়ই পরিষ্কার হবে এই পুরস্কারের মূল্য। সাধারণত, সবশেষ ৩০ বছরের সেরা পারফর্ম করা ফুটবলারকে দেয়া হয় এই বিশেষ ব্যালন ডি’অর।

ছবি: সংগৃহীত

১৯৮৯ সালে আলফ্রেডো ডি স্টেফানোকে দেয়া হয় সুপার ব্যালন ডি’অর। আরও দুই কিংবদন্তি ফুটবলার ইয়োহান ক্রুইফ এবং মিশেল প্লাতিনিকে হারিয়ে এই সম্মান অর্জন করেন রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ১৯৫০’র দশকে পাঁচটি ইউরোপিয়ান কাপ জয়ে মূল ভূমিকা পালন করা ডি স্টেফানো। পুরস্কারটি দেয়া হয় সাধারণত ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়দের। ডি স্টেফানোর জন্ম আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে হলেও স্পেনের পাসপোর্টও ছিল এই রিয়াল কিংবদন্তির।

তবে অনলাইনে জোর দাবি উঠেছে, এবার লিওনেল মেসিকে দেয়া হোক সুপার ব্যালন ডি’অর। টুইটে এক ক্রীড়া সাংবাদিক বলেন, বিগত ৩ দশকের সেরা ফুটবলারকে দেয়া হয় সুপার ব্যালন ডি’অর। এর আগে কেবল ডি স্টেফানোই পেয়েছিলেন এই পুরস্কার। এবার এই মর্যাদা দেয়া হোক লিওনেল মেসিকে। এই পুরস্কারের একমাত্র দাবিদার সে। অবিশ্বাস্য এক ক্যারিয়ারকে এভাবেই মর্যাদা দেয়া উচিত।

ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে আরেকজনের দাবি, আমি জানতামই না সুপার ব্যালন ডি’অর কী। এখন জেনেছি যে, কেবল ডি স্টেফানোই পেয়েছিলেন এই পুরস্কার। এবার এটা মেসিকে দেয়া হোক। গত ৩০ বছরের মধ্যে এই পুরস্কারের যোগ্য তার চেয়ে বেশি কেউই না।

১৬ বছর আকাশি সাদা জার্সিতে রেকর্ডের ফুলঝুরি কুড়িয়েছেন লিওনেল মেসি। ক্যারিয়ারের অন্তিম মূহূর্তে সেই মেসির হাতে অবশেষে ধরা দিলো সোনালি রঙের ট্রফি। তিনি এমন একজন, যার হাতেই মানায় সোনালি ট্রফিটা। যে ট্রফিও হয়তো তার হাতে উঠতে পেরে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। এই ট্রফিই হয়তো অপেক্ষার প্রহর গুনছিলো এই ম্যাজিকাল মানুষটার হাতে উঠার। সেরাদের সেরার তকমা গায়ে ছিল আগে থেকেই, বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে সর্বকালের সেরা বনে যান ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি।

আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। ছবি: সংগৃহীত

সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা লিওনেল মেসি ফিরেছেন স্বরূপে। লিগ ওয়ানের ১৯ ম্যাচে ১২ গোলের পাশাপাশি অ্যাসিস্টে ভূমিকা রেখেছেন ১৪’টিতে। মাঠে তার সরব উপস্থিতিতে ভেস্তে যাচ্ছে প্রতিপক্ষের সকল পরিকল্পনা। কোপা আমেরিকা ও ফিনালিসিমা’র পর এবার মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ শিরোপা দেখেছে আর্জেন্টিনা। নিজের সোনায় মোড়ানো ক্যারিয়ারে রোজারিওর ছেলে মেসি ১০২৫ ম্যাচে করেছেন ৭৯৯ গোল এবং ৩৮৮ অ্যাসিস্ট। নিঃসন্দেহে অবিশ্বাস্য এই পরিসংখ্যানের পরও সুপার ব্যালন ডি’অর জিতবেন তিনি, এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। তবে তিনি যে এর যোগ্য, তাতে কোনো মতভেদ থাকার কথা নয়। এমনকি পিয়ার্স মরগ্যানেরও না!

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply