টাকা নিয়ে সন্তানদের দ্বন্দ্ব, পড়ে আছে বাবার মরদেহ

|

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

বাবা মারা গেছেন শনিবার সন্ধ্যায়। কিন্তু দাফন করতে দিচ্ছেন না সন্তানরা। একদিন ধরে মরদেহ পড়ে আছে অ্যাম্বুলেন্স। অবসরের পর পাওয়া ৫০ লাখ টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ভাইবোনের দ্বন্দ্বের কারণেই এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাড়ির সামনেই অ্যাম্বুলেন্সে পড়ে আছে বাবার লাশ। দাফন করা দূরের কথা, অ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহ নামানো পর্যন্ত হয়নি।

বাবার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে রেখেই অবসরকালীন ভাতা বাবদ প্রাপ্ত ৫০ লাখ টাকা নিয়ে সন্তানেরা বিবাদে লিপ্ত হয়েছেন। এমন ঘটনায় এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলেও সন্তানরা নির্বিকার।

স্থানীয়রা জানায়, মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মনির আহমদ (৬৫)। তিনি পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় তার মৃত্যু হয়। রোববার রাত গড়িয়ে গেলেও তার দাফন করা যায়নি।

মনির আহমদের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। বাবার অবসরকালীন ভাতার টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে। ভাগবাটোয়ারা না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফনে রাজি নন তারা। বাবার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে রেখে চলছে তাদের ঝগড়া।

ভাইদের দাবি, তাদের বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৌশলে ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে সরিয়ে নিয়েছেন বেবী নামে তাদের এক বোন। সেই টাকা ফেরত চান ভাইয়েরা। তবে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বেবী আক্তার।

এমন অমানবিক ঘটনায় এলাকার লোকজনও ক্ষুব্ধ। নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। একপর্যায়ে খবর দেন পুলিশকে। ছোট ছেলে সৌদি আরব থেকে ফিরলে এবং সোমবার ব্যাংক খুললে টাকার হিসাব শেষে বাবার লাশ দাফন করবেন বলে এলাকাবাসীকে জানিয়েছেন মনির আহমদের ছেলেরা।

বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাহাব উদ্দিন জানান, মনির আহমদের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা। ছোট ছেলে বিদেশ থেকে ফিরলে ফয়সালা হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এ ঘটনা দুঃখজনক।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ যমুনা নিউজকে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাধানের চেষ্টা করলেও মনির আহমদের সন্তানরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কয়েকদফা বসে মীমাংসার চেষ্টা করেছেন। সোমবার সকালে মরদেহ দাফনের আশ্বাস দিয়েছেন ভাইবোনরা।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply