খুন হয়েছিলেন সুশান্ত? এ পর্যন্ত যা যা জানা গেলো

|

সুশান্ত সিং রাজপূত (১৯৮৬-২০২০)

মৃত্যুর দুই বছর পর আবারও আলোচনায় বলিউডের প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। দীর্ঘ ২৮ মাস পর তার রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তের বন্ধ পাতাগুলি যেনো খুলে যাচ্ছে আবারও। সামনে এসেছে বিস্ফোরক এক দাবি। যে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছিল সুশান্তের, সেই হাসপাতালেরই মর্গের কর্মী রূপকুমার শাহ দাবি করেছেন, আত্মহত্যা নয়, বরং খুন করা হয়েছিল সুশান্তকে।

২০২০ সালের জুন মাসের কথা। মুম্বাইয়ের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় বলিউড তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ। সেই রহস্যজনক মৃত্যু খুন নাকি আত্মহত্যা, তা নিয়ে বিতর্ক এখনও চলমান। ভারতের নারকোটিক্স বিভাগ, সিবিআই-এর মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্ত জারি রেখেও এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। এবার বছর দুয়েক বাদে এক বিস্ফোরক তথ্য এলো সামনে।

যে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছিল সুশান্তের, সেই কুপার হাসপাতালের মর্গকর্মী রূপকুমার শাহ’র দাবি, সুশান্তকে খুনই করা হয়েছিল। মর্গে সুশান্তের মৃতদেহে একাধিক ক্ষতের চিহ্ন দেখেছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কুপার হাসপাতালের মর্গ কর্মী রূপকুমার শাহের দাবি, ওর (সুশান্ত) গায়ের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এমনকি ঘাড়েও আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই আমরা। সুশান্তের গলায় দড়ির দাগটিও দড়িতে ঝুলে পড়ার জন্য হয়েছে বলে মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছিল, সুশান্তকে গলায় কেউ দড়ি পেঁচিয়ে ধরেছিলেন। তার থেকেই ওই দাগ হয়েছে।

রূপকুমার শাহ আরও বলেন, বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি কেউই। বরং তাকে ‘নিয়ম মেনে কাজ’ করতে বলা হয়।

কিন্তু সুশান্তের মৃত্যু তো হয়েছে ২০২০ সালে। এখন ২০২২ শেষের পথে। এতোদিন কেন মুখ বন্ধ করে ছিলেন তিনি?  

এমন প্রশ্নের জবাবে রূপকুমার শাহ বলেন, আগের রাজ্য সরকারকে বিশ্বাস করতে পারতাম না। তাই কথা বলিনি। কিন্তু, এখন আমি আমার বয়ান রেকর্ড করাতে রাজি আছি। এখন আর নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবি না। বরং চাই, সুশান্ত যেনো সুবিচার পায়।

এদিকে, সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে নাম জড়ায় তারই প্রেমিকা বাঙালী অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর। জেল খাটতে হয় রিয়াকেও। কুপার হাসপাতালের মর্গ কর্মীর এমন মন্তব্যের পর, চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই প্রতিক্রিয়া দিলেন রিয়া। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে এক হেঁয়ালিভরা পোস্ট করেন এ অভিনেত্রী।

রিয়া চক্রবর্তীর ইনস্টাগ্রাম স্টোরির স্ক্রিনশট।

বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন সুশান্তের বড় বোন শ্বেতা সিং কীর্তিও। সিবিআইকে অনুরোধ করেছেন যাতে তারা সুশান্তের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করেন। অন্যদিকে, বিহারের প্রাক্তন পুলিশকর্তা গুপ্তেশ্বর পান্ডেও সুশান্ত হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি সুশান্তের আইনজীবী বলেন, আমি এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। তবে শুধু এটুকু বলবো যে, সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা নয়। বরং এর পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। একমাত্র কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই পারে সত্য উদ্ঘাটন করতে।

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বারবার। নাম জড়ায় আন্ডারওয়ার্ল্ডেরও। উঠে আসে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির মাদক ও অর্থ তছরুপ কাণ্ডও। বর্তমানে এনসিবি, সিবিআই ও ইডি– এই তিন সংস্থা তদন্ত চালাচ্ছেন আলোচিত এ মৃত্যু রহস্যের। আড়াই বছর পেরোলেও সুশান্তের মৃত্যু রহস্যের কোনো কিনারা হয়নি আজও। মর্গ কর্মীর এমন বিস্ফোরক দাবির পর অবশেষে কী খুলতে যাচ্ছে সেই রহস্যের জট?

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply