সাতক্ষীরায় বেশি লাভের লোভ দেখিয়ে কোটি টাকা লোপাট

|

অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান।

সাতক্ষীরায় একটি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে সদস্যদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সঞ্চয় হারিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে শত শত গ্রাহকের। অভিযোগ, সদস্যদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের ডিপোজিট করায় সমিতিটি। এরপর অফিস বন্ধ করে সটকে পড়েন সমবায় সমিতির প্রধান হাবিবুর রহমান।

জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদরের ব্যাংদহা বাজারে ২০১৯ সালে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এজেন্ট শাখা চালু করেন আশাশুনি উপজেলার হাবিবুর রহমান। অভিযোগ, চাকরি দেয়ার নামে অন্তত ৩০ জনের কাছ থেকে জামানত বাবদ তিনি নেন ১ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা করে। পরবর্তীতে কেউই নিয়মিত বেতন পাননি তারা। ফেরত পাননি জামানতের টাকাও। শর্ত পূরণ করতে না পারায়, ওই বছরই এজেন্ট শাখাটির অনুমোদন বাতিল করে বেসরকারি ব্যাংকটি।

এরপর, একই অফিসে বনলতা নামে একটি সমবায় সমিতি খুলে বসেন হাবিবুর। অধিক মুনাফাসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে শুরু হয় সদস্য সংগ্রহ। নিয়োগ দেয়া হয় মাঠকর্মী। চাকরির জন্য তাদের কাছ থেকেও নেয়া হয় বিভিন্ন অংকের টাকা। অধিক মুনাফার আশায় প্রতারণার ফাঁদে পা দেন বহু মানুষ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র হিজলডাঙ্গা গ্রাম থেকেই শতাধিক মানুষ সমিতিতে জমা দেন প্রায় ৯০ লাখ টাকা। বছর খানেক আগে হঠাৎ-ই অফিস বন্ধ করে লাপাত্তা হন হাবিবুর। সঞ্চয় হারিয়ে সর্বশান্ত অনেকে।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর হাবিবুর রহমানের মুখোমুখি হয় যমুনা নিউজ। সমিতির সদস্যদের মোটা অংকের টাকা নেয়ার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান বলেন, তারা তো পাওনাদার। আমি সসম্মানে তাদের টাকা দিতে চেয়েছি। যদি কেউ সাংবাদিক হিসেবে আপনার কান ভারী করে থাকে তাহলে সেটা আপনাকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য করতে পারে।

এদিকে, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা বলছেন, আইন অনুযায়ী ফিক্সড ডিপোজিট নেয়ার সুযোগ নেই সমবায় সমিতির। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ না পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. করিমুল হক বলেন, এককালীন বা ফিক্সড ডিপোজিট যেগুলো সেগুলো শুধু ব্যাংক করতে পারে, কোনো সমবায় সমিতি এগুলো করতে পারে না। আজও পর্যন্ত কোনো গ্রাহক এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ দিতে আসেনি।

অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশ সুপারের। সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, আমি এ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো জায়গা থেকে বা কারো কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply