জ্বালানি সংকট মেটাতে পশুর মল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বসনিয়ায় আলোচনায় খামারি

|

চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কমবেশি জ্বালানি সংকটে ভুগছে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। এ সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বসনিয়ায়। তবে জ্বালানি সংকটের মধ্যেও খামারের বর্জ্য কাজে লাগিয়ে বায়োগ্যাসের পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বসনিয়ার এক খামারি। পূর্ণ অটোমেশন আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করেছেন সাইদ কারিক নামের এই খামারি। তাকে প্রণোদনা দিয়েছে দেশটির সরকারও। খবর রয়টার্সের।

এরই মধ্যে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সাইদ কারিকের এই বায়োগ্যাসের পাওয়ার প্ল্যান্ট। কারণ এখানকার পশুর মল-মূত্র আর খাবারের খোসা থেকে তৈরি হচ্ছে বায়োগ্যাস। যা পরবর্তীতে রূপান্তর হচ্ছে বিদ্যুতে।

দুই হাজার গরুর এই ফার্ম মূলত বিখ্যাত দুধের জন্য। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এখান থেকেই শুরু হয় পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন। এখনও সম্পূর্ণভাবে চালু না হলেও ভবিষ্যতে এখানকার প্ল্যান্টগুলো থেকে ঘণ্টায় ৬০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

এ নিয়ে খামারি সাইদ কারিক বলেন, আমরা এখানে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেশ কিছু ধাপ রয়েছে। মিক্সিং পট, ফারমেন্টার, বায়োগ্যাসের জন্য স্টোরেজ ইউনিট এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইঞ্জিন সবই আছে প্ল্যান্টে। কৃষির উৎপাদন বাড়াতে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে। স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ পাবেন কৃষক। সরকার আমাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে। শিগগিরই আমরা আরো বড় পরিসরে কাজ শুরু করব। নিজেদের তুলে ধরতে পারব ইউরোপের বাজারে।

খামার মালিক আরও জানান, যেকোনো পচনশীল বস্তু যেমন প্রাণীর মল, খাবারের খোসা বা আবর্জনা বাতাসের অনুপস্থিতিতে পচানো হলে তৈরি হয় বায়োগ্যাস। এ সময় তৈরি হওয়া মিথেন দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে উৎপাদন করা হয় বিদ্যুৎ।

পাওয়ার প্ল্যান্টটির ম্যানেজার মিসাদ তারসোনোভিক বলেন, কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করা হয়। মিশ্রণের মাত্রা চেক করা হয়, সেই সাথে সামঞ্জস্য করা এবং অন্যান্য উপকরণগুলোর মাত্রা ঠিক রাখাসহ সবস্তরগুলোই খুবই সিস্টেমেটিকভাবে পরিচালনা করা হয়।

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বলকান অঞ্চলের এই দেশটিতে বেড়েছে খাদ্যপণ্য, জ্বালানিসহ বিদ্যুৎতের দাম। তাই সংকট কাটাতে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে দেশটি। এ জন্য পর্যাপ্ত সহায়তাও দিচ্ছে সরকার।

বসনিয়ায় উৎপাদিত ৬০ শতাংশ কয়লা চালিত প্ল্যান্ট এবং বাকিটা আসে জলবিদ্যুৎ থেকে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে তা রফতানি হয় পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে। উচ্চ প্রযুক্তির এমন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন দেশটির সামগ্রিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply