‘নদী বাঁচাতে তরুণদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন’

|

ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে সাতশ’ নদী বিশাল জনগোষ্ঠীর বেঁচে থাকা ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করছে। অথচ অসচেতনতা আর দখল-দূষণে বেশিরভাগ নদী এখন মৃতপ্রায়। ফলশ্রুতিতে বন্যা ও প্রাকৃতিক নানা জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীবন-জীবিকা; প্রকৃতি হারাচ্ছে স্বকীয়তা। ৮ম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে যোগ দিয়ে এই আক্ষেপ প্রকাশ করেন বক্তারা। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় দরকার সমন্বিত প্রচেষ্টা।

নদী ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাধারণ মানুষের ওপর তার কতটা প্রভাব পড়ে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হাওড় এলাকায় হওয়া সবশেষ বন্যা। বান পরবর্তী ভাঙনে স্থানীয়রা হারিয়েছে ভিটে মাটিও। তারা জানান, আগে নদী পানি বেশি ছিল। তাই পর্যাপ্ত মাছের যোগানও ছিল। এখন পানি কমে যাওয়ায় আগের মতো মাছও পাওয়া যাচ্ছে না।

নদীর গতিপথ সমুন্নত রাখা, দখল-দূষণ রোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে ৮ম বারের মতো অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ সিলেটের কুশিয়ারা নদী ঘিরে আয়োজন করেছে ৩ দিনের আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন। প্রবাহ ধরে রাখা ও অভিন্ন নদীগুলো নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি এবারের সম্মেলনে নদী বাঁচাতে তরুণদের প্রয়াসকে জোর দেয়া হচ্ছে। অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, যারা পরিবর্তন আনতে পারে তারা কীভাবে দেখছে। তাদের কাছ থেকে আমরা জানতে চাই, শুনতে চাই। এই প্রজন্ম, তার আগের প্রজন্ম যে ভুলগুলো করেছে; তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেই আশা করবো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নদী টিকিয়ে রাখতে সরকারের তদারকি ও জনগণের সচেতনতা বাড়াতে হবে এখনই। সমন্বিত প্রয়াসে নদী বাঁচানো না গেলে জনজীবনই টিকিয়ে রাখা যাবে না। আর প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতেও নদীকে চলতে দিতে হবে স্বাভাবিক গতিপথে। আয়োজনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নদী রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও নদী বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাই। নদী বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর বিনিয়োগ করতে আমরা আগ্রহী।

সম্মেলন থেকে টেকসই নদী ব্যবস্থাপনা ও নদী কেন্দ্রিক স্থানীয় বিশাল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা রক্ষার তাগিদও দেন বক্তারা। নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, নদীর প্রবাহ এবং জলযান কোনোটিই বন্ধ করা যাবে না। বিভিন্ন নীতিমালা আছে। সেগুলো যেন মেনে চলা হয়, তার জন্য আমরা চাপ সৃষ্টি করছি।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply