স্টাফ করেসপনডেন্ট, টাঙ্গাইল:
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর ৫৩ শতাংশ কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে যাতে কাজটি সম্পন্ন হয়- এজন্য কাজ করা হচ্ছে। এভাবেই যমুনা নদীতে নির্মীয়মাণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর কাজ যথাসময়ে শেষ করার আশা প্রকাশ করেছেন রেল মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে যমুনা নদীতে নির্মীয়মাণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর কাজ পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন রেলমন্ত্রী।
রেলমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে এ রেলসেতুর ৫৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে৷ যমুনার টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের দুই প্রান্তে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার দূরে এ রেল সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এ রেল সেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে এপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এ রেল সেতু চালু হলে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের ২২টি জেলার সঙ্গে ট্রেন চলাচল সহজ করবে। একই সঙ্গে আন্তঃএশিয়া রেল যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ করিডর হিসেবেও কাজ করবে এ সেতু। এ রেলসেতু দেশের উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেল সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পারাপারের সময় গতি অনেক কমিয়ে দেয়া হয়। সেতুর ওপর দিয়ে ব্রড গেজ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। এ জন্য নতুন স্বতন্ত্র রেলসেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকালে সে দেশের সরকার এ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হয়। ২০১৭ সালের মার্চে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষ হয়। বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর ৫৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ বেড়ে এখন ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩৬ শতাংশ।
রেলমন্ত্রী বলেন, রেলসেতুর কাজ করতে গিয়ে আমরা তেমন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হইনি। ২০২৪ সালের আগস্টের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে আমরা আশাবাদী। রেল সেতুটির ৫০টি পিয়ারের মধ্যে ২৪টি পিয়ারের কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই পিলারের কাজ শেষ হবে বলেও জানান রেলমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ ডবল লাইন রেলসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য পৃথকভাবে নদী শাসন করতে হচ্ছে না। যমুনা ইকো পার্কের পাশ দিয়ে এটি বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম অংশের রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) এবং বঙ্গবন্ধু সেতু (পশ্চিম) স্টেশন ভবন আধুনিকীকরণসহ ইয়ার্ড রিমডেলিং নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও নির্মাণ করা হবে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনের সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন ব্যবস্থার মডিফিকেশন, রেলওয়ে ব্রিজ মিউজিয়াম, সেতু রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস ও আবাসনও।
মন্ত্রীর সফরের সময় টাঙ্গাইল ২ আসনের সাংসদ ছোট মনি , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
/এসএইচ
Leave a reply