বাংলাদেশে অধ্যাপক আরও অনেকে আছেন, কিন্তু সবাই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ নন। তার ভাষাতেই বলি, ‘যারা পড়ান তারা সবাই শিক্ষক। কিন্তু সব শিক্ষক গুরু হয় না’। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ গুরু হতে পেরেছেন। কারণ তিনি পথ দেখিয়েছেন। আলোকিত মানুষ গড়ার এই কারিগরের ৮০-তম জন্মদিন আজ।
১৯৩৯ সালের ২৫ জুলাই কলকাতার পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রতিবারের মতো এবারও নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে তার জন্মদিন। বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরস্থ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ভক্ত-অনুরাগীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়, সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে কেক কাটা, স্মৃতিচারণা আরও কতকি।
অধ্যাপক সায়ীদের পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের কচুয়া থানার কামারগাতি গ্রামে। তার বাবা আযীমউদ্দিন আহমদ ছিলেন স্বনামধন্য শিক্ষক। মায়ের নাম করিমুন্নেসা। বাবার শিক্ষক হিসেবে অসামান্য সাফল্য ও জনপ্রিয়তা শৈশবেই তাকে এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট করে। তাই তিনি ১৯৬১ সালে শিক্ষকতা দিয়েই কর্মজীবন শুরু করেন। মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে পাকাপাকিভাবে শিক্ষকতার শুরু অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের। এরপর, পর্যায়ক্রমে সিলেট মহিলা কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও ঢাকায় ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজে (বর্তমানে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ) শিক্ষকতা করেন। ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে সেখানে যোগদান করেন। ঢাকা কলেজেই তিনি তার শিক্ষকতা জীবনের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত করেছেন।
দেশের হাজারো ছাত্রছাত্রীর মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
বড় মানুষেরা আশার সঞ্চার করেন, অধ্যাপক সায়ীদও আশা জাগানিয়া মানুষ। প্রায়ই বলে থাকেন, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। তুমিও তাই।’ হতাশা, কলুষতা দূর করে উন্নত মূল্যবোধ চর্চার মাধ্যমে মানুষ আলোকিত হয়ে উঠবে এই প্রত্যাশায় ‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগানে ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র’।
জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে সে ক’জন মানুষ বিপথে না গিয়ে মানুষের মাঝে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে কাজ করে গেছেন তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে আসবে অধ্যাপক সায়ীদের নাম। শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সংগঠক, টিভি ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশ আন্দোলন কর্মী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আকালের সময়ে এক অনুপ্রেরণার নাম।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply