সিরিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে ছড়াচ্ছে কলেরা ও হাম, জাতিসংঘের উদ্বেগ

|

ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোয় আশঙ্কাজনক হারে ছড়াচ্ছে কলেরা ও হামের মতো রোগ- রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও। খবর এপির।

সম্প্রতি সিরিয়ার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলো ত্রাণ প্রেরণ নিয়ে জটিলতার বিষয়টি সামনে এনে জাতিসংঘ জানিয়েছে, দুর্যোগে সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এক কোটির বেশি মানুষ। কিন্তু, বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় ঢুকতে পারছে না ত্রাণবহর। মানবিকতার খাতিরে বিবদমান সবপক্ষকে নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রয়োজনে ভোটের মাধ্যমে ফয়সালার তাগিদও দিয়েছে দেশটি।

ভূমিকম্পে পরিবারের সদস্যদের হারানো সিরিয়ান নাফরিক জাফের মেহমুত গণমাধ্যমে নিজের ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, যথেষ্ট হয়েছে!! গত মঙ্গলবার, আমার মা ধ্বংসস্তুপের নীচে মারা গেছেন। অথচ, এখনও লাশ বের করতে পারলাম না। কোনো স্বেচ্ছাসেবী-উদ্ধারকারী দল চাই না। তামাশা দেখা বন্ধ করুন। পারলে- এ দুর্দশা থেকে রক্ষা করুন।

গত এক সপ্তাহে জাফের মেহমুতের মতো অনেকের অপেক্ষাই এখন পরিণত হয়েছে ক্ষোভে। চোখের সামনে প্রিয়জনের মৃত্যু দেখেও, হাত-পা বাধা বহু মানুষের। উদ্ধারকারীরা লাশ বের করতে পারলে ঠাঁই হচ্ছে কবরে। গোরস্তানে নেই তিল ধারণের জায়গা। সবশেষ ভরসা- গণকবর।

জানানো হয়েছে, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে উদ্ধারকাজ শেষ হতে লাগবে কয়েক মাস; এ সময়সীমা গড়াতে পারে বছরেও। এ পরিস্থিতিতে, দুর্গত এলাকাগুলোয় নতুনভাবে বিভিন্ন রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।

ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক রিচার্ড ব্রেনান বলেন, দুর্গত এলাকাগুলোয় বিভিন্ন সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। কারণ, ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকছেন অগণিত মানুষ। সেখানে নেই সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা। এরইমধ্যে দেখা দিয়েছে হাম ও কলেরার প্রার্দুভাব। ভূমিকম্পে সিরিয়ার এক কোটির বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু, আলেপ্পো-লাতাকিয়ায় বাস্তুচ্যুত সাড়ে ৩ লাখ মানুষ।

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ-সংগঠন। কিন্তু, বিদ্রোহী অধ্যুষিত সিরিয়া অঞ্চলে কেউই প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না। দেশটির সব পক্ষকে এ ইস্যুতে নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি চাইছে- ভোটাভুটির মাধ্যমে অনুমোদন আদায় করুক জাতিসংঘ।

সিরিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর অটো পিডারসেন বলেন, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেছে সীমান্তে। শুধু, আসাদ প্রশাসনের অনুমতির অপেক্ষা। বিবদমান পক্ষগুলোকে বলবো, রাজনীতিকে একপাশে রাখুন। মনোযোগ দিন মানবিকতায়। কারণ, যুদ্ধের পর ভূমিকম্পের ধাক্কায় মরছেন সিরীয়রা।

প্রসঙ্গত, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় ভূমিকম্পে ধসে পরেছে ২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি-স্থাপনা। যেগুলোর সাড়ে ৫শ’টি পুরোপুরি মিশে গেছে মাটিতে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply