শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বার্সা-ম্যান ইউনাইটেডের ড্র

|

ছবি: সংগৃহীত

এবারের ইউরোপা লিগের সবচেয়ে বড় দুই দল বার্সেলোনা-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। স্বাভাবিকভাবেই এই ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনাও ছিল সেরকম। ন্যু ক্যাম্পের প্রায় লাখখানেক দর্শককে হতাশ করেনি কোনো দলই। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পশরা সাজিয়ে প্রাণবন্ত ৯০ মিনিট উপহার দিয়েছে বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুই দলই এক পর্যায়ে লিড নিলেও শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয়েছে নকআউট পর্বের প্লে-অফ রাউন্ডের প্রথম লেগ।

নিজেদের ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে ম্যান ইউনাইটেডকে আতিথ্য দেয় বার্সা। ম্যাচের শুরুতে বার্সেলোনাকে চেপে ধরার চেষ্টা করে ইউনাইটেড। সপ্তম মিনিটে পরপর গোলের জন্য দুইটি শটও নেয় সফরকারীরা। ব্রুনো ফার্নান্দেসের পর টাইরেল মালাসিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার জর্দি আলবা।

জর্দি আলবার নৈপুণ্যেই ম্যাচের ৮ মিনিটে নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। বাঁ দিক থেকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে গিয়ে নিচু ক্রস বাড়ান আলবা। গাভি বল ছেড়ে দিলে এরপর বল পেয়ে যান রবার্ট লেভানদোভস্কি। কাছের পোস্টে তার শট ফিরিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি হেয়া। 

ছবি: সংগৃহীত

অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে ২৮তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান রেড ডেভিল ফরোয়ার্ড ভাউট বেহর্স্ট। তবে গোলরক্ষককে একা পেয়েও অনেকটা তার বরাবর শট নেন এই ডাচ ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে মার্কাস রাশফোর্ডের ডান পায়ের শট দূরের পোস্ট দিয়ে জালেই যাচ্ছিল, ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্যর্থ করে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর ওয়ান-বিসাকার ব্যর্থতায় বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে যান আলবা। তবে তিনি শট করার আগেই ছুটে গিয়ে ক্লিয়ার করেন ইংলিশ ডিফেন্ডার। 

৪১তম মিনিটে বড় একটা ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মিডফিল্ডার পেদ্রি, বদলি নামেন সার্জিও রবের্তো। ্প্রথমার্ধে গোলশূন্য ড্র নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত ইউনাইটেড। ওয়ান-বিসাকার ক্রস ঠিক মতো ক্লিয়ার করতে পারেননি রোনাল্ড আরাউহো, পেয়ে যান জ্যাডন স্যানচো। তবে খুব ভালো জায়গা থেকেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। ম্যাচের ৫০ মিনিটে কর্ণার পায় বার্সেলোনা। সেই কর্নার থেকে হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার মার্কোস অ্যালনসো।

ছবি: সংগৃহীত

তবে বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে পারেনি বার্সা। এর দুই মিনিটের মধ্যে অপর প্রান্তে এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে নিয়ার পোস্টে টার স্টেগানকে পরাস্ত করেন মার্কাস রাশফোর্ড।  

৫৯ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় গোল করে ইউনাইটেড। এই গোলের মূল কারিগরও রাশফোর্ড। ছোট করে নেওয়া কর্নার থেকে বল নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকেন রাশফোর্ড। তারপর করেন ক্রস। তার ক্রস ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও ক্যাসেমিরোকে পেড়িয়ে বার্সা ডিফেন্ডার জুলস কুন্ডের গায়ে লেগে জালে জড়ায়। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। 

ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয়ার্ধের এই পর্যায়ে এসে ম্যাচে ইউনাইটেড পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু বার্সা হার মানেনি। ৭৬ মিনিটে ক্যাসেমিরোর এক ব্যাকপাসকে কেটে বলের দখল নেন জুলস কুন্ডে। লেফট উইংয়ে থাকা রাফিনহাকে পাস দেন তিনি। একটু ভিতরে এসে বক্সে দাঁড়ানো লেভানদোভস্কি ক্রস করেন রাফিনহা। তবে সেই ক্রসে পা ছোঁয়াননি লেভা। তার এবং গোলরক্ষকের সামনে ড্রপ খেয়ে জালে জড়ায় বল। ম্যাচে ফিরে আসে বার্সা। 

শেষ ১৫ মিনিটের মুহুর্মুহু আক্রমণ শানায় বার্সা। বিশেষ করে নির্ধারিত সময়ের শেষ পাঁচ মিনিটে। এই সময়ে বার্সার একটি কর্নার থেকে প্রায় নিজের জালে বল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ক্যাসেমিরো। বল ক্রসবারে লাগায় শেষ রক্ষা হয় ইউনাইটেডের। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল।

/আরআইএম

  

 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply