‘আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না’, শুনলে হাসি পায়: চঞ্চল চৌধুরী

|

ছবি: সংগৃহীত

‘আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না’, শুনলে হাসি পায় বলে মন্তব্য করেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে হিন্দুস্থান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা যদি ৭১ বছর পার করে বাঙালিদের নতুন করে বোঝাতে হয়, তাহলে সেটা আমাদের ব্যর্থতা। ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি তো বাঙালির রক্তের সাথে মিশে থাকা উচিত। এই যে আমি কথা বলছি, যেটা বলতে চাইছি, সহজেই বুঝিয়ে ফেলছি, এটা কি সত্যিই অন্য কোনো ভাষায় বোঝানো সম্ভব? তা সে আমি যতই অন্য ভাষায় পরিপক্ক হই। নিজের মায়ের মুখের ভাষাকে ছোট করার অর্থ নিজের মা-কেই তো অপমান করা। এটা যদি এতবছর পর বাঙালিদের নতুন করে বোঝাতে হয় তাহলে সেই শহীদদের আত্মত্যাগ মিথ্যা হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, নিজের জন্মদাত্রী মায়ের মুখের ভাষায় কথা বলতে আজকাল অবশ্য কেউ কেউ লজ্জা পান। সেটা সত্যিই হাস্যকর। আমার প্রশ্ন, রাশিয়া, চিন, জাপান, জার্মানিসহ বেশকিছু দেশ আছে যে দেশের মানুষরা তো ইংরাজিতে কথা বলতেও চান না, খুব প্রয়োজন না পড়লে। কই ওরা তো নিজেদের ভাষা নিয়ে লজ্জা পান না! তাহলে আমরা কেন?

এর জন্য অবশ্য কিছু পরিবার, কিছু মানুষজনই দায়ী, সেটা তাদের সঠিক শিক্ষার অভাব। কিছু মা-বাবা এবং পরিবারের অন্যান্যরা আছেন, যারা তাদের সন্তান বাংলার থেকে ইংরাজি বললেই বেশি গর্ব করেন। ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের ওই কবিতার কথা মনে পড়ছে, ‘জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না’। সত্যিই হাসি পায়। আসলে কে কীভাবে তার সন্তানকে বড় করবেন, শেখাবেন, তা পরিবারের ওপর নির্ভর করে। পরিবারের শিক্ষাতেই আমরা নিজের মা-কে, মায়ের মুখের ভাষাকে ভালোবাসতে শিখি।

২১ ফেব্রুয়ারি পালন নিয়ে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ১৯৫২ সালের সেই সময় আমি জন্ম নিইনি, কিংবা আমার বাবা-মায়েরও সেই অর্থে সে সময়ের কোনো স্মৃতি নেই। তবে তারপরেও ওরা আমায় সেই দিনটির কথা আমায় বলেছেন, দিনটির গুরুত্বের কথা জানিয়েছেন। আমি গ্রামে জন্মেছি এবং বড় হয়েছি। ছোটবেলায় এই দিনটিতে সকালবেলা স্কুলের সকলের সাথে প্রভাত ফেরিতে বের হওয়া, এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে যাওয়া, শহীদ বেদিতে মালা দেয়ার কথা আজও ভীষণ মনে পড়ে। তখন অবশ্য গ্রামে কংক্রিটের শহীদ বেদি ছিল না, মাটি দিয়ে কাঠ দিয়ে নিজেরাই শহীদ বেদি বানাতাম। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে পড়ার সময়ও ভাষা দিবস পালন করেছি। সেটাও একটা আলাদা আবেগ।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply