রিমন রহমান:
সঞ্চয়পত্র কিনে রাজস্ব বিভাগের মারপ্যাচে পড়ছেন সাধারণ গ্রাহক। কর সনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন এর তথ্য দেয়া নিয়েই তৈরি হচ্ছে জটিলতা। নিয়ম আছে, সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি আয়ের বিবরণীও দিতে হয়। কিন্তু দুই লাখ টাকা বিনিয়োগেও জানতে চাওয়া হচ্ছে আয়ের উৎস ও টিআইএন নম্বর। ফলে বিড়ম্বনায় সঞ্চয়পত্র কেনা কমিয়েছে সাধারণ মানুষ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) সঞ্চয়পত্র বিক্রি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্ত দিয়েছে।
এদিকে, সঞ্চয়পত্রে দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করে করের মারপ্যাচে পড়েছেন একজন গ্রাহক। ঢাকার করাঞ্চল-১৪ থেকে তার নামে ইস্যুকরা চিঠিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল কেন করা হয়নি তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। জবাব দিতে আইনজীবীর শরনাপন্ন হয়েছেন তিনি।
বিনিয়োগকারী আনোয়ার মোস্তফা বলেন, আমরা হলাম সাধারণ লোক। কোনো ভুলত্রুটি হলে সাধারণ কাজে যে দৌড়াই, তাতে বাধাগ্রস্থ হবে।
সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগে যাতে কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্ত হতে না পারে, সেই জন্য নানাক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ এনেছে অর্থবিভাগ। তবে, অতিকড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্র বিমুখ হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা রাজধানীর এক নারী বললেন, এখন তো খরচ অনেক বেড়েছে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার টাকার মুনাফা দিয়ে কোনোরকমে হয়ে যায়।
সঞ্চয় অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোতালেব হোসেন বলেন, আয়কর রিটার্নের কারণে এখন অনেকে বিনিয়োগ করে না। দেখা যাচ্ছে, আগে যাদের সঞ্চয়পত্র কেনা আছে তাদেরও চিঠি দেয়া হচ্ছে।
সঞ্চয়পত্রে মানুষের আগ্রহ কমেছে, অন্তত কয়েক মাসের বিক্রি তথ্য তাই বলছে। এক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সীমা নিদিষ্ট করে দেয়াই বড় কারণ। ভর্তুকি কমানোর অংশ হিসেবে সুদহার বাজারভিত্তিক এবং বিক্রি কমিয়ে আনতে পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।
সেন্টার পর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, টিআইন, আয়ের হিসেব এবং ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন করা যায়, তাহলে নতুনকে নিরুৎসাহিত করা দরকার হবে না। বরং নিয়মের বাইরে যারা আছে তাদেরতেক যদি বের করে দেয়া যায়, তাহলে এটি এক-চতুর্থাংশের মধ্যে চলে আসবে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
/এমএন
Leave a reply