ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্যপদ হারালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মানহানি মামলায় দুই বছর কারাদণ্ডের রায়ের পরদিনই এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ভারতের লোকসভা সচিবালয়। এরইমধ্যে শূন্য ঘোষিত হয়েছে রাহুলের নির্বাচনী আসন। আর, মোদি প্রশাসনের এমন তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছে, ভারতের বিরোধী দলগুলো। বিষয়টিকে, ভারতের গণতন্ত্রের জন্য ‘কালো অধ্যায়; আখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস। খবর বিবিসির।
‘মোদি’ পদবী নিয়ে বির্তকিত মন্তব্যের জেরে করা মানহানির মামলায়, অনেকটা আকস্মিকভাবেই বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুই বছরের জেলের সাজা শোনানো হয় রাহুল গান্ধীকে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই, বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো আসে রাহুলের পার্লামেন্ট আসন শূন্য হওয়ার ঘোষণা।
রাহুলের সাজার রায় হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে। শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে অনেকটা তড়িঘড়ি করেই, রাহুলের সদস্যপদ শূন্য ঘোষণা করে নোটিশ জারি করে, লোকসভা সচিবালয়। ফলে, রাহুলের আসন কেরালার ওয়ানাদে নতুন নির্বাচনের প্রয়োজন হবে।
লোকসভার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে, তাৎক্ষণিকভাবেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে কংগ্রেসের বিভিন্ন শাখা। দলটির নেতাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে সরব রাহুলের মুখ বন্ধ করতেই, চক্রান্ত চলছে।
কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এ প্রসঙ্গে বলেন, নিরব মোদি, লোলিত মোদি আর বিজয় মালিয়ারা যখন দেশের অর্থ চুরি করে বিদেশে পালিয়ে যায়, কই তখন তো সরকারের অনুভুতিতে আঘাত লাগে না? আসলে বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়টি পুরোটাই নাটক। গণতন্ত্রের নামে যখন অনাচার-অত্যাচার চলছে তখন প্রতিবাদে সরব হয়েছেন রাহুল গান্ধী। এ কারণেই তার কণ্ঠরোধ করতে চায় বিজেপি সরকার। গণতন্ত্র আজ হুমকির মুখে। রাজনৈতিক মন্তব্য করেও আজকাল মানহানির মামলা হয়। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, এখন যেকোনো মোদি নাম নিলেও মানহানি হয়ে যায়।
ভারতের আইন অনুসারে, ফৌজদারি মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত কেউ জনপ্রতিনিধি থাকতে পারবেন না। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা হলেও তা একমাসের জন্য স্থগিত রাখেন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের ঘোষণাও দিয়েছে কংগ্রেস। তবে, আপিলের আগেই সদস্যপদ খারিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণার সময় এক ভাষণে- সব চোরদের পদবী ‘মোদি’ হয় কেনো? এমন প্রশ্ন তোলেন রাহুল। তার এ বক্তব্য নিয়ে সুরাট আদালতে মামলা করেন বিজেপি নেতা ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি।
/এসএইচ
Leave a reply