আলমগীর হোসেন:
তারল্য সংকটে ভুগছে বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংক। সংকট সামাল দিতে বাধ্য হয়েই সুদের হার বাড়িয়ে আমানত সংগ্রহ করছে অনেক ব্যাংক। মেয়াদী আমানতের ক্ষেত্রে কোনো কোনো ব্যাংক সুদ দিচ্ছে সাড়ে ৭ থেকে ৮ শতাংশ। সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারিত থাকায় ঋণ বিতরণ করতে হচ্ছে ৯ শতাংশে। এতে কমে গেছে সুদহারের ব্যবধান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ঋণ-আমানতের গড় সুদহারের ব্যবধান ৩ শতাংশের নীচে। কোনো কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ ব্যবধান প্রায় দেড় শতাংশ নেমে এসেছে। যা ভাবিয়ে তুলেছে ব্যাংকারদের।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ্ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো সন্দেহ নেই, লাভের জায়গাটা সংকুচিত হয়ে আসছে। টাকা থাকলে এখন সাড়ে ৭ বা ৮ শতাংশে খাটানো যাচ্ছে। ব্যংক যদি সাড়ে ৭ বা ৮ শতাংশে টাকা নেয়, তাহলে তার স্প্রেডটা থাকে কোথায়? এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভাবছে, কীভাবে বিষয়টা সামাল দেয়া যায়।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমে গেছে। যে কারণে কমছে আমানতের প্রবৃদ্ধি। সুদহার যতটা বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে ততটা বাড়েনি। শুধু সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোই বাড়তি সুদে আমানত নিচ্ছে। সংকট সামাল দিতে ঋণ সুদের উচ্চসীমা তুলে দেয়ার পাশাপাশি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা দূর করতে হবে।
বিআইবিএম এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, ব্যাংক স্প্রেড ৩ শতাংশই যথেষ্ট। কিন্তু বাংলাদেশের কনটেক্সটে তারা ব্যবসা করতে গেলে ৫-৮ শতাংশ না হলে ব্যবসা করতে চায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত, শুধু ল্যান্ডিং রেট ও ডিপোজিট রেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যাংকগুলোকে কড়া নির্দেশ দেয়া, যাতে ওদের ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো করে। যে সমস্ত ব্যাংক বেশি রেটে ডিপোজিট নিয়েছে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে সেসব ব্যাংক ১০০ শতাংশের বেশি ল্যান্ডিং করে বসে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক জানান, বেশ কয়েকটি খাতে সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। বাকি খাতগুলো নিয়েও পর্যালোচনা হচ্ছে।
বিনিময় হারের পাশাপাশি সুদহারও পর্যায়ক্রমে বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দিতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
/এমএন
Leave a reply