আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস; কেন হয় এ রোগ?

|

থ্যালাসেমিয়া উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এক রোগ। বাবা-মা দু’জনই যদি বাহক হন, তবে সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর শরীরের হিমোগ্লোবিন এবং লোহিত রক্তকণিকা তৈরির ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এই ব্যাধি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রতি বছর ৮ মে পালিত হয় বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। যদিও এই রোগে আক্রান্তদের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই বাংলাদেশে।

থ্যালাসেমিয়া রক্তের হিমোগ্লোবিন সম্পর্কিত জিনগত সমস্যা। বাবা-মা উভয়ই ত্রুটিযুক্ত জিন বহন করলে গর্ভাবস্থায় সন্তানের ২৫ শতাংশ থ্যালাসেমিয়া হওয়ার শঙ্কা থাকে। সাধারণ মানুষের চেয়ে এই রোগীদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম উৎপাদন হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, রক্তের একটি উপাদান হলো হিমোগ্লোবিন। এই হিমোগ্লোবিন তাদের কম তৈরি হয়। এ জন্য তারা সবসময় রক্ত স্বল্পতায় ভোগে। রক্ত তৈরি করতে না পারার জন্য তাদের অন্য জনের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাত শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। যেখান থেকে প্রতি বছর নতুন করে ৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে। তাই বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়ার উপস্থিতি শনাক্তে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথাও জানান চিকিৎসকরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শেখ মইনুল খোকন বলেন, মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে যদি এই রোগের বাহককে যদি আমরা শনাক্ত করতে পারি, তবে কয়েক জেনারেশনে গিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা সাশ্রয় করতে পারি। এ ক্ষেত্রে মামাতো খালাতো ফুফাতো ভাই-বোনের মধ্যে বিয়ে না হওয়াই ভালো।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীরা যখন আরেকজনের কাছ থেকে ব্লাড নিতে থাকে, তখন ক্রমশই তার শরীরে আয়রন জমতে থাকে। আয়রন জমে গেলে তা হার্টে, লিভারে গিয়ে জমা হতে পারে। এই জটিলতা নিরসনে তখন চিকিৎসা ব্যয় ক্রমেই বাড়তে থাকে।

পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য না হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা নিতে হয় এই রোগে আক্রান্তদের। একজন রোগীর প্রতি মাসে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। যদিও নীতিনির্ধারকরা বলছেন, দেশে আগের চেয়ে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা বেশ সহজলভ্য। যদিও বিভাগীয় শহরের বড় মেডিকেল ছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এখনও এই রোগের চিকিৎসা নেই।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply