রংপুরে ধর্ষণ ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

|

গ্রেফতারকৃত দুই নারী পাচারকারী।

স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর:

রংপুরের বদরগঞ্জে এক কিশোরীকে অপহরন করে ধর্ষনের পর বিক্রি করে দেয়া ও তাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার ঘটনায় মামলায় নারী পাচারকারী সিন্ডিকেটের নেত্রী ইয়াসমিনসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডাদেশ ও এক নারীকে ৮ বছরের আটকাদেশ দিয়েছে আদালত। 

সোমবার ( ৮ এপ্রিল) বিকেলে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিচারক মোঃ রোকনুজ্জামান এ আদেশ দেন।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান, ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্কুল গিয়েছিলো বদরগঞ্জের ওসমানপুর খৈদ্যপাড়ার মমিনুল হকের সপ্তম শ্রেণি পডুয়া মেয়ে। পরে তার এক বান্ধবী তাকে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে স্কুল থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে বটেরতল এলাকায় ভুক্তভোগীর বান্ধবীর দুলাভাই অহিদ আলী ও অজ্ঞাত ২ জন ব্যক্তি ভিকটিমকে পাউরুটি খেতে দিলে সেটি খেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ভুক্তভোগী।

এরপর তারা ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় নিয়ে যায় ভুক্তভোগী। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে ওই কিশোরীকে অহিদ আলী রাতভর ধর্ষণ করে।  

পিপি আরও জানান, পরেরদিন ওই কিশোরীকে ভৈরবের নারী পাচারকারী দলের নেত্রী ইয়াসমিনের কাছে বিক্রি করে দেয় আসামী অহিদ আলী। এরপর, নারী পাচারকারী ইয়াসমিন ও তার স্বামী মানিক ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। প্রতিদিন ২-৩ জন খদ্দের ভিকটিমকে ধর্ষন করতো।  

পিপি জানান, এরপর পাচারকারীচক্রের হোতা ইয়াসমিন ভুক্তভোগীকে বিদেশে বিক্রির জন্য দরদাম করার কথা ভুক্তভোগীর কানে যায়। এর ফাঁকেই কৌশলে ইয়াসমিনের বাড়ি থেকে পালিয়ে একটি বাসে ওঠে সে। ওই বাসে থাকা এক মহিলা যাত্রীকে ঘটনা জানালে তিনি ভুক্তভোগীর বাবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। পরে ভুক্তভোগীর বাবা বদরগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় কিশোরগঞ্জ থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। একই সাথে পাচারকারী দলের নেত্রী ইয়াসমিন ও তার স্বামীকেও  গ্রেফতার করে পুলিশ।

মেয়ের সন্ধান না পাওয়ায় তার বাবা আগেই বদরগঞ্জ থানায় জিডি করে রেখেছিলেন। পরে তিনি বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং মানবপাচার আইনে ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৩ মার্চ ৪ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ শিট দাখিল করে পুলিশ।

পিপি জানান, আদালতে ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য-জেরা শেষে অহিদ আলী ও নারী পাচারকারী ইয়াসমিনকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সাথে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও ভুক্তভোগীর বান্ধবী তারামনি ঘটনার সময় শিশু থাকায় তাকে ৮ বছরের আটকাদেশ দেন আদালত। এছাড়াও দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় ইয়াসমিনের স্বামী মানিককে খালাস দেন আদালত। রায়ের সময় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অহিদ আলী অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply