থাইল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে জনমনে প্রশ্ন; আবারও সেনা সমর্থিত সরকার নাকি গণতন্ত্র?

|

ছবি : সংগৃহীত

প্রায় এক দশকের সেনা সমর্থিত সরকারের অবসান ঘটবে থাইল্যান্ডে? রোববারের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে এ প্রশ্নই বড় হয়ে উঠেছে দেশটিতে। বিরোধীদের আশা, ২০১৯ সালের মতো সাজানো নির্বাচন হবে না এবার। প্রতিফলন ঘটবে জনগণের মতের। খবর রয়টার্সের।

জনমত জরিপের ইঙ্গিত, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে থাইল্যান্ডের ক্ষমতায় আবারও প্রত্যাবর্তন ঘটবে সিনাওয়াত্রা পরিবারের। তবে, নির্বাচনে জয়ী হলেও বিরোধীরা কেউ সরকার গঠন করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে।

করোনার পর থেকেই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে থাইল্যান্ডের অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতির সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই থান জনগণের ক্ষোভের মুখে সেনা সমর্থিত সরকার।

২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় সেনা সমর্থিত সরকার প্রয়ুথ- চান ওচা। ৯ বছর পর এবার সরকার বদলের সুযোগ থাই জনগণের সামনে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাই ইতিবাচক পরিবর্তন ও উন্নয়নের প্রত্যাশা ভোটারদের।

এক ভোটার জানান, আমি গণতান্ত্রিক সরকার চাই। যেখানে আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, অধিকার থাকবে।

আরেকজন জানান, জনগণের কথা চিন্তা করবে এমন সরকারকেই নির্বাচিত করবো আমি। এবার অবশ্যই গণতন্ত্রের জয় হবে।

এবারের নির্বাচনে লড়াই হবে মূলত পুইয়ে থাই পার্টি, মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি ও ইউনাইটেড থাই নেশন এর মধ্যে। এককভাবে কোন দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে জোটবদ্ধভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে আঞ্চলিক দলগুলো।

নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে পুয়ে থাই পার্টির মনোনীত থাকসিন কন্যা পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে। জনমত জরিপেও এগিয়ে তিনি। তবে ক্ষমতায় যেতে তাকে পেতে হবে সেনা নিয়ন্ত্রিত উচ্চকক্ষ সিনেটের সমর্থন।

ক্ষমতা ধরে রাখতে ২০১৭ সালে সংবিধানে কিছু সংশোধনী আনে সেনা সমর্থিত সরকার। যেখানে প্রতিনিধি পরিষদের ৫০০ আসনের বাহিরে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে উচ্চকক্ষ সিনেটের ২৫০ আসন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এই সিনেটের সমর্থনেই সরকার গঠন করেছিলো প্রয়ুথ চান ওঁচা। তাই সিনেটের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় যেতে হলে পুয়ে থাই পার্টিকে পেতে হবে বিশাল বিজয়। তবে এবারের নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের বেশ আশা জাগাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিরিপান নোগসুয়ান বলেন, ২০১৯ এর নির্বাচন জনগণকে হতাশ করেছিল। কিন্তু এবার সবাই পরিবর্তন চায়। তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণে সবাই ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রাজক কংকিরাতি বলেন, জনগণ চায় না থাইল্যান্ড আরেকটি মিয়ানমার হোক। এ বছর সরকার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা করে জনগণের আস্থা হারিয়েছে। এবারের নির্বাচন তাই থাই জনগণের জন্য গণতন্ত্র রক্ষার আরেকটি প্রচেষ্টা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিকে সেনাবাহিনীর প্রভাব মুক্ত করতে বর্তমানে শক্ত নেতৃত্বের প্রয়োজন থাইল্যান্ডের। আর তাই ৫ কোটি ২০ লাখ ভোটারের দেশটিতে গণতন্ত্র ফেরানোর চেষ্টা মনে করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনকে।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply