রিয়ালকে বিধ্বস্ত করে স্বপ্নের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি

|

চ্যাম্পিয়নস লিগ মানেই যেনো রিয়াল মাদ্রিদের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। কিন্তু এবার গল্পটা ম্যানচেস্টার সিটিই লিখলো; তবে প্রত্যাবর্তনের নয়, দাপুটে ফুটবলের। চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজাদের গুঁড়িয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে পা রাখলো ম্যানচেস্টার সিটি।

ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে জিতেছে পেপ গার্দিওলার দল। সিলভার জোড়া গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আত্মঘাতী গোল করেন এডার মিলিতাও। শেষ দিকে চতুর্থ গোলটি করেন হুলিয়ান আলভারেজ। প্রথম লেগ ১-১ ড্র হওয়ায় দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ অগ্রগামিতায় ফাইনালে উঠলো সিটি।

ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতে শুরু হয় সিটির আক্রমণ। প্রবল চাপ সামলে রিয়াল নিজেদের সীমানা থেকে সেভাবে বের হতেই পারছিল না। সপ্তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। কিন্তু কেভিন ডি ব্রুইনের পাস পেয়ে বক্সে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে কাটিয়ে শট নেয়ার জায়গা পাননি আর্লিং হাল্যান্ড। পাস দেয়ার মতো আশেপাশে কোনো সতীর্থও ছিল না তার। আবার ত্রয়োদশ মিনিটেও সুবর্ণ একটি সুযোগ নষ্ট করেন হাল্যান্ড। তবে ২৩ মিনিটে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে কোর্তোয়ার ইস্পাত দৃঢ় দেয়াল। ডি ব্রুইনার পাস থেকে ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে বুলেট গতির শটে কোর্তোয়া বাধা পার করেন বের্নার্দো সিলভা।

৩০ মিনিট পর রিয়ালকে একটু গা ঝাড়া দিতে দেখা যায়। পরপর দুই মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও করিম বেনজেমা দুটি প্রতি-আক্রমণের চেষ্টা করেন, যদিও গোলরক্ষকের পরীক্ষাও নিতে পারেননি তারা। ৩৫তম মিনিটে অনেক দূর থেকে বুলেট গতির শট নেন টনি ক্রুস। লাফিয়েও বলের নাগাল পাননি সিটি গোলরক্ষক এডারসন। তবে ভাগ্যের ফেরে বল লাগে ক্রসবারে।

৩৭তম মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ম্যানসিটি। ইলকাই গুন্দোগান শট প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে বল চলে যায় সিলভার কাছে, নিখুঁত হেডে জালে পাঠান তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ম্যাচ অবশ্য প্রথমার্ধের মতো একপেশে ছিল না। সিটির আক্রমণের জবাব প্রতি-আক্রমণ দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল রিয়াল। বলের দখলেও সিটির ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলার চেষ্টা করে রিয়াল। বল নিয়ে একাধিকবার সিটির রক্ষণে হানাও দেয় তারা। কিন্তু স্বাগতিক রক্ষণ ভেঙে গোল পাওয়ার আসল কাজটি করতে পারছিল না তারা।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

৭২তম মিনিটে ম্যাচের ফলাফলে প্রায় নিষ্পত্তি হয়ে যেতে পারতো। রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন হাল্যান্ড, সামনে একমাত্র বাধা কোর্তোয়া। তবে প্রতিপক্ষের শট পা বাড়িয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক। তবে চার মিনিট পর নিজেদের ভুলেই ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে যায় রিয়াল। বাঁ দিক থেকে ডি ব্রুইনের ফ্রি কিকে বক্সে কেউই ছোঁয়া দিতে পারেনি, তবে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই নিজেদের জালে বল পাঠান ডিফেন্ডার মিলিতাও।

এরপর ৮৪তম মিনিটে বদলি নামা ফিল ফোডেনের নো লুক পাস বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়াতেই জালে পাঠান ৮৯তম মিনিটে বদলি নামা আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলভারেজ। সেই সঙ্গে সিটি পায় রিয়ালের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় জয়।

গত আসরের সেমিফাইনালে এই রিয়ালের বিপক্ষেই ফিরতি লেগে অবিশ্বাস্য কয়েক মিনিটে পথ হারিয়ে হেরে বসেছিল সিটি। এবার আর কোনো ভুল হতে দেয়নি তারা। বলা যায়, ইউরোপের রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নদের কোনো পাত্তাই দেয়নি তারা।

ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান। আগামী ১০ জুন ইস্তানবুলে তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে গার্দিওলার শিষ্যরা।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply