নাটকীয় মোড় নিলো তুরস্কের রাজনীতি। প্রথম ধাপের নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে থাকা সিনান ওগান এরদোগানকে ঢালাও সমর্থন জানানোর পর উল্টে যায় পাশার দান। বিশ্লেষকরা বলছেন, রান-অফ বা দ্বিতীয় ধাপে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের জয় এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। নতুন সরকারে ওগানের জন্যেও থাকবে ভালো পদ- এমন ইঙ্গিত রাজনৈতিক বোদ্ধাদের। অবশ্য শক্ত প্রতিপক্ষ কামাল কিরিচদারোগলু এতো সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নন। খবর এপির।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে থাকা প্রার্থী সিনান ওগান বলেন, পিপলস অ্যালায়েন্সের প্রার্থী রিসেপ তাইয়ের এরদোগানের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রইলো। গত ২০ বছর ধরে তিনি ক্ষমতায় আছেন। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, তাদের বলবো- রান অফে এরদোগানকে জয়যুক্ত করুন।
এরদোগান নাকি কামাল- কার পাল্লা ভারী হচ্ছে? এমন টানাপোড়েনের মধ্যেই সোমবার (২২ মে) তুর্কি প্রেসিডেন্টকে সমর্থন জানালেন, ডানপন্থী নেতা সিনান ওগান। ফলে, অনেকটাই স্পষ্ট হলো রান অফ বা দ্বিতীয় ধাপের ফলাফল। সাফ ইঙ্গিত- আবারও ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
বিশ্লেষকরাও বলছেন, টানা দুই দশক শাসনে থাকা এরদোগানের জয় এখন কেবলই সময়ের ব্যাপার। হিসাব-নিকাষ শেষ করে দিয়েছেন ওগান। যার জন্য, সরকারে তিনি পেতে পারেন সম্মানজনক স্থান।
এ প্রসঙ্গে তুরস্কের বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক চান সেলজুক বলেন, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের আগেই, সবদিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন এরদোগান। একে তো ম্যাজিক ফিগারের খুব কাছাকাছি। তার ওপর, সমর্থন দিলেন তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিনান ওগান। তাছাড়া, পার্লামেন্টেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে তার রাজনৈতিক জোট। এখন শুধু দেশবাসীকে দিতে হবে বাস্তবায়নযোগ্য প্রতিশ্রুতি। তার সাফল্য সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তুরস্কের বর্তমান রাজনীতি ইস্যুতে দেয়া এক বক্তব্যে গ্রিক রাজনীতি বিশ্লেষক কনস্টানটিনোস ফিলিস বলেন, কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় তা এরদোগান খুব ভালোভাবে জানেন। নিশ্চয়ই ওগানের সাথে তার পারস্পরিক বোঝাপড়া হয়েছে। এরদোগানের অগ্রাধিকারের প্রথমেই রয়েছে- অর্থনৈতিক উন্নয়ন। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইলে; যে সরকারই তুরস্কের ক্ষমতায় বসুক পশ্চিমাদের সাথে সখ্যতা বজায় রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে, ৪৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পান রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। আর তার শক্ত প্রতিপক্ষ কামাল কিলিচ-দারোগলু’র ভাগ্যে জোটে ৪৪ দশমিক ৮ ভাগ সমর্থন। কিন্তু, কেউই ছুঁতে পারেননি ম্যাজিক ফিগার। সে কারণেই, তুরস্কের ইতিহাসে প্রথমবার ভোট গড়ালো দ্বিতীয় ধাপে। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ মে।
/এসএইচ
Leave a reply