বগুড়ায় ভাত চুরির চেষ্টা করায় যুবককে গণপিটুনি, ভিডিও ভাইরাল

|

বগুড়া ব্যুরো:

রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করায় বগুড়ায় সাব্বির নামের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়েছে স্থানীয়রা। তাকে পেটানোর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন নেশায় আসক্ত সাব্বির চুরির চেষ্টা করায় তাকে মারপিট করা হয়েছে। তবে সাব্বিরের দাবি, ক্ষুধার জ্বালায় সে ওই বাড়ির রান্না ঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করেছিলো, তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না।

স্থানীয়রা আরও জানান, সোমবার (২২ মে) রাত ১১টার দিকে বগুড়া সদরের লাইলীপাড়া এলাকার একটি বাড়ির দোতলার রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করছিল সাব্বির। এ সময় বাড়ির লোকজন দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে সে পালানোর চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় লোকেরা তাড়া করে ধরে ফেলে তাকে। পরে হাত-পা বেঁধে প্রায় ঘণ্টাখানেক নির্যাতনের পর তাকে ছেড়ে দেয় স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে সাব্বিরকে হাত-পা বেঁধে মারপিটের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে দেখা যায়, কেউ একজন সাব্বিরের হাত ধরে আছেন এবং আরেকজন তাকে পেটাচ্ছেন। মানুষের জটলার ভেতর থেকে একেকবার একেকজন এসে মারপিট করছেন তাকে। কেউ পেটাচ্ছেন লাঠি দিয়ে, কেউ আবার কিল-চড়-লাথি।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা কেউ গণমাধ্যমে কথা বলতে না চাইলেও ওই বাড়ির গৃহকর্তী নাজনিন আক্তার বলেন, এর আগে কয়েক দফা আমার রান্নাঘর থেকে ভাত-তরকারি চুরি হয়েছে। কিন্তু, কে চুরি করছে তা আমরা জানতে পারিনি। সোমবার রাতে চুরির সময় তিনি দেখে ফেলায় চিৎকার করলে, স্থানীয়রা সাব্বিরকে ধরে ফেলে। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাকে মারপিট করেছে বলে জেনেছি।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে বারোপুর এলাকার একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতে দেখা গেছে সাব্বিরকে। সাব্বির জানায়, কোনো কিছু চুরির উদ্দেশে নয় বরং ক্ষুধার তাড়নায় ভাত চুরি করে খেতে গিয়েছিলো সে।

সাব্বিরের স্বজনরা বলছেন, ফার্নিচারের দোকানে কাজ করলেও নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ায় বাবা-মা হারা সাব্বিরকে কেউ খেতে দিতো না। তবে ভাত চুরির অভিযোগে নানীর বাড়িতে বেড়ে ওঠা সাব্বিরকে এভাবে নির্যাতনের ব্যাপারটি মানতে পারছেন না স্বজনরা।

সাব্বিরকে মারপিটের ভিডিও ভাইরালের পর তৎপর হয়েছে স্থানীয় পুলিশও। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম জানান, ঘটনা যা-ই ঘটে থাকুক এভাবে একজনকে মারপিটের অধিকার কারো নেই। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও তাদের আটকে জেলা পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply