মানুষের যেমন দুর্বলতা আছে তেমনি আছে শক্তিমত্তাও। নিজের সেই শক্তির জায়গা খুঁজে বের করতে পারলে যেকোনো অসম্ভবকে জয় করা সম্ভব। এমনটাই মনে করেন দুই পা ছাড়া এভারেস্ট জয় করার বিরল রেকর্ড গড়া হরি বুধা মাগার। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তো ছিলই, লক্ষ্য পূরণের পথে আসে আরও অনেক বাধা। এই এভারেস্ট জয়ী জানান, সব জয় করেই তিনি গড়েছেন ইতিহাস।
এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন অনেকেই। তবে, বাকি সবার চেয়ে আলাদা হরি বুধা মাগার নামের নেপালি এই এভারেস্ট জয়ী। দুই পা ছাড়াই বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করেছেন তিনি। অতিমানবীয় অর্জনের জন্য কাঠমান্ডুতে ফিরেই তিনি পেয়েছেন বীরের মর্যাদা।
৪৩ বছর বয়সী হরির ইতিহাস গড়ার পথটা অবশ্য সহজ ছিল না। তাকে পড়তে হয়েছে অনেক বাধার মুখে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পাহাড়ে ওঠা আগেই নিষিদ্ধ করে নেপাল সরকার। পরে অবশ্য এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা হলে তা স্থগিত করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
১৭ এপ্রিল শুরু হয় কৃত্রিম পা নিয়ে হরির এভারেস্ট অভিযান। সকল বাধা পেরিয়ে এই মাউন্টেন ক্লাইম্বার চূড়ায় পৌঁছান ১৯ মে। এই বিশ্বরেকর্ডধারীর দাবি, প্রবল ইচ্ছে শক্তি আর লক্ষ্যে অটুট থাকলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।
এভারেস্ট জয়ী হরি বুধা মাগার বলেন, ‘পৃথিবী সর্বোচ্চ চূড়ায় দাঁড়িয়ে আমার কেমন লেগেছিল? এই অনুভূতি অসাধারণ। প্রতিটা মানুষের নিজস্ব দুর্বলতা ও অক্ষমতা রয়েছে। তবে, সেসবকে পাশ কাটিয়ে আমাদের শক্তির জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। আর সেটা পারলেই আমরা সবাই আরও ভালো ও অর্থবহ জীবনযাপন করতে পারবো।’
অন্য অনেক নেপালি যুবকের মতোই ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দিয়েছিলেন হরি। ২০১০ সালে আফগানিস্তানে অভিযানের সময় দুই পা হারান। তবে নিজের এই দুর্বলতার কারণে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়তে নারাজ হরি। বললেন, মৃত্যু পর্যন্ত শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে যাবো। তাদের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। আমি যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, সেটি যেন অন্যরা না হয়। যাদের হাত-পা নেই, তারাও যেন বাকিদের মতোই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
দুই পাবিহীন প্রথম এভারেস্ট জয়ী হলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে এই কৃতিত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে প্রথম নন হরি। ১৯৯৫ সালে ডান পা ছাড়াই এভারেস্ট জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে টম হুইটেকারের।
/এম ই
Leave a reply