চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেফতার

|

ফাইল ছবি

রাজধানীর ঢাকা কলেজের আবাসিক হলে কৌশলে একটি বেসরকারী কোম্পানির কর্মকর্তাকে অপহরণ করে আটক রাখার ঘটনা ঘটেছে ৷ পরে মুক্ত হয়ে নিউমার্কেট থানায় ওই কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে নিউমার্কেট থানা পুলিশ৷

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউমার্কেট থানার ওসি মো. শফিকুল গনি সাবু যমুনা টেলিভিশনকে জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এরইমধ্যে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক জনি হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান (অয়ন) সিগমাইন্ড নামের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন৷ প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করে৷

অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে এবং ভুক্তভোগী মেহেদীর নিকট দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিলো। চাঁদা না দেয়ায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা ব্রিজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার মোড়ে থাকা দুইটি সিসি ক্যামেরা, সাতটি পাওয়ার ব্যাংক, পাঁচটি ক্যাবল, দুইটি ক্যামেরা স্ট্যান্ড খুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা৷

পরে রাতে সিয়াম ও রমজান নামের ঢাকা কলেজের দুই ছাত্র ভুক্তভোগীকে ফোন করে বিষয়টি জানায় এবং এগুলো ফেরত পেতে হলে ঢাকা কলেজে আসতে হবে বলে জানায়৷ এরপর, প্রতিষ্ঠানটির স্টাফ মো. তৌকির জিনিসপত্র ফেরত নিতে আসতে গেলে তাকে আটক করে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অভিযুক্তরা।

অভিযুক্তদের কথা মতো ভুক্তভোগী মেহেদী ঢাকা কলেজে গেলে তাকেও আটক করে মারধর করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগীদের থেকে নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্তরা

এরপর শুক্রবার (২৬ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় জনি হাসান, এস এম শফিকসহ আরও একজন ভুক্তভোগীকে গাউছিয়া মার্কেট মোড়ে রেখে যায় অভিযুক্তরা। সেখানে উপস্থিত টহল পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী মেহেদীকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে৷

পরে, এ ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান অয়ন৷ মামলায় নাম থাকা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত৷

অভিযুক্তরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক জনি হাসান, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক, ছাত্রলীগ কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মেহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্নব, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, মো. বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম, শাহীন৷

ঘটনায় জনি হাসান, এসএম শফিককে আটক করেছে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। অভিযুক্ত সবাই সক্রিয়ভাবে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ৷ এর আগেও নিউ মার্কেট ও আসেপাশের এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে৷

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply