সিনিয়র করেসনপডেন্ট, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জে যুবকের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করলেন চিকিৎসক। সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এন্ডোসকপি করে মোতালেব হোসেনের পেট থেকে বের করা হয় কলমগুলো। তার পেটে আরও চার–পাঁচটি কলম রয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
মোতালেব হোসেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের আটারদাগ গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে। ব্যথা ও অসুস্থতা নিয়ে একের পর এক চিকিৎসক কাছে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো সমাধান মিলছিল না। শেষে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে বিষয়টি ধরা পড়ে এবং ওই যুবকের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হয়।
মোতালেবের চাচাতো ভাই আব্দুর রহমান জানান, এর আগে ২০০৬ সালেও মোতালেব হোসেনের পেটব্যথা হয়েছিল। সে সময় অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে দুটি লোহার টুকরা বের করা হয়।
হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ সূত্র জানায়, মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক দুই সপ্তাহ ধরে মোতালেব হোসেনের পেটব্যথার চিকিৎসা দিয়েছেন। কোনো ফল না পেয়ে পেটে এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম করে বুঝতে পারেন, তার পাকস্থলিতে কলমজাতীয় বস্তু রয়েছে। এরপর গত বৃহস্পতিবার তিন ঘণ্টা ধরে তার গলা দিয়ে টিউব ঢুকিয়ে (এন্ডোসকপি করে) ১৫টি কলম বের করা হয়। তার পেটে এখনও চার-পাঁচটি কলম রয়েছে।
মোতালেব হোসেনের মা লাইলী বেগম বলেন, আমার ছেলে ভালো ছাত্র ছিল। এসএসসি পাসের পর সে গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর কখন কলমগুলো গিলেছে আমরা বলতে পারব না। দীর্ঘদিন সুস্থ স্বভাবিকভাবেই কাজ করেছে সে। একবছর হলো পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডাক্তার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১৫টি কলম বের করা হয়েছে। আগামী সোমবার আবার এন্ডোস্কপির মাধ্যমে বাকি কলমগুলো বের করা হবে। স্বাভাবিক অবস্থায় তিনি কীভাবে কলমগুলো গিললেন, বুঝতে পারছি না। এটি আসলেই চিন্তার বিষয়। আমাদের মনে হচ্ছে, তার স্নায়ুতন্ত্রের কোনো সমস্যা থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, মোতালেব হোসেন এখন অনেকটাই সুস্থ। সবগুলো কলম অপসারণের পর তাকে স্নায়ুতন্ত্র বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হবে।
জানতে চাইলে মোতালেব হোসেন বলেন, আগে একদম সুস্থ–স্বাভাবিক ছিলাম। একবছর ধরে পেটব্যথায় কোনো কাজ করতে পারছিলাম না। তবে কখন কীভাবে কলমগুলো গিলে ফেলেছি, কিছুই বলতে পারছি না।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাঁতের শাড়িতে ব্যবহার করা নকশা এঁকে সেটি তাঁতযন্ত্রে বসানোর কাজ করতেন মোতালেব হোসেন। তিনি ১৯৯৯ সালে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। এরপর ২০১১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা দেননি তিনি।
এটিএম/
Leave a reply