‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ এর ট্রেলার নিয়ে চলছে বিতর্ক

|

ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবি।

মারিয়া হোসেন:

কাশ্মিরের ‘ফাইল্‌স’ বা কেরালার ‘স্টোরি’র পর এবার বড়পর্দায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। তবে এবার কোনো ‘ফাইল’ বা ‘স্টোরি’ নয়, প্রস্তুত একেবারে আস্ত ডায়েরি। ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ এর মাধ্যমে বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তুলে ধরা হচ্ছে সিনেমার পর্দায়। ট্রেলার মুক্তির সাথে সাথে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সে বিতর্ক এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রীতিমত পরিচালককেই তলব করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।

একের পর এক প্রোপাগান্ডা সিনেমায় সয়লাব বলিউড। যা নিয়ে বিভক্ত শিল্পী ও কলাকুশলীরা। রাজনীতি অঙ্গনেও তৈরি হয়েছে উত্তাপ। বিবেক আগ্নিহোত্রীর ‘দ্য কাশ্মির ফাইলস’ ও সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। ভারতের ক্ষমতাসীন দল যখন একদিকে এসব সিনেমার গুণগান গাইছে, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে সিনেমাগুলো প্রদর্শনের ওপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এবারের টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নির্মাতা সানোজ মিশ্র তৈরি করছেন ‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামের সিনেমা।

মাসখানেক আগে ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই চলছে জোর সমালোচনা। যার জেরে হয়েছে মামলাও। ‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ সিনেমার বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি ও সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ এনে গত ১১ মে কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় দায়ের হয় মামলা। মঙ্গলবার (৩০ মে) এর মধ্যে সিনেমার নির্মাতাকে থানায় হাজিরা দিতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তবে পুলিশি হাজিরা এড়িয়ে গেছেন নির্মাতা সানোজ। জানিয়েছেন, প্রাণের ভয়ে কলকাতায় পা রাখতে পারছেন না তিনি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা সানোজ মিশ্র।

চলচ্চিত্র নির্মাতা সানোজ মিশ্র বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এখন রাজনীতি হয় ভোটব্যাংকের জন্য। বিশেষ ভোটব্যাংকের তোষামোদ নিয়েই তারা ব্যস্ত। নিজেদের মধ্যে ঝামেলা লাগিয়ে কীভাবে রাজনীতিকরা ফায়দা তোলেন, এটাই আমার সিনেমার বিষয়বস্তু। আমাদের সিনেমা পুরোপুরি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। অথচ পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ আমাকে হেনস্তা করছে। আমি চলচ্চিত্র পরিচালক, অপরাধী নই। মত প্রকাশের অধিকার আমারও আছে।

এদিকে, শেষ হয়েছে ‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ সিনেমার ৬০ শতাংশের শুটিং। এরইমধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে ‘দ্বিতীয় কাশ্মির’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে মাসখানেক আগে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমার ট্রেলারে। ‘জনসংখ্যায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে, শরিয়া আইন চলবে’, বলা হয়েছে এমন কথাও।

ট্রেলারে দেখানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চলছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনকি এটাও বলা হয়েছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের তোয়াজ করায় হিন্দুরা ভিটেছাড়া হচ্ছে। এছাড়া খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতিসহ একের পর এক ইস্যু তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে দাবি করা হয় ট্রেলারে। এখন প্রশ্ন হলো, বিতর্ক আর মামলার বেড়াজালে আদৌ কী মুক্তি পাবে ‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’?

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply