ঝিনাইদহে ৬১ বছর পর স্কুলের বকেয়া পরিশোধ করে আলোচনায় বৃদ্ধ

|

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

দীর্ঘ ৬১ বছর পর বিদ্যালয়ের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। সোহরাব হোসেন বিশ্বাস নামে ওই বৃদ্ধ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা। উপজেলার ফুলহরি হাইস্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সোহরাব হোসেন বিশ্বাস বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে এই টাকা পরিশোধ করেন।

সোহরাব হোসেন জানান, ১৯৬২ সালে তার বয়স ছিল ১৯ বছর। এর আগে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছিলেন তিনি। এ সময় পড়ালেখা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা হয় তার। তবে তখন বাড়ির কাছে কোনো হাইস্কুল ছিল না সোহরাব হোসেনের। ফলে ৫-৬ মাইল দূরের ফুলহরি হাইস্কুলে গিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন।

ওই সময় ষষ্ঠ শ্রেণির মাসিক বেতন ছিল ৪ টাকা। তিনি ৬ মাস ওই বিদ্যালয়ে পড়েন। অর্থাভাবে এর মধ্যে চার মাসের বেতন বাকি পড়ে যায়। বেতন বাকির জন্য পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। পরে পড়াশোনা ছেড়ে তামাক-সুপারির ব্যবসা শুরু করেন।

এখন সোহরাব হোসেনের বয়স ৮০ বছর। জীবনের এই শেষ মুহূর্তে সোহরাব হোসেনের ইচ্ছা, মৃত্যুর আগে সব ধারদেনা পরিশোধ করবেন তিনি। এই চিন্তা থেকে পর্যায়ক্রমে সব পাওনাই পরিশোধ করেছেন এই বৃদ্ধ। তবে এক পর্যায়ে তার মনে পড়ে, ফুলহরি হাইস্কুলে তার চার মাসের ২৪ টাকা বকেয়া বেতনের কথা। তাই ৬১ বছর পর বকেয়া ২৪ টাকার জায়গায় ৩০০ টাকা পরিশোধ করে দেনামুক্ত হয়েছেন সোহরাব হোসেন।

এ নিয়ে বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক লক্ষণ প্রসাদ সাহা বলেন, ৮০ বছর বয়সী সোহরাব হোসেনের কাছে বকেয়া বেতন হিসাবে বিদ্যালয়টির পাওনা ছিল ২৪ টাকা। ৬১ বছর পর তিনি পরিশোধ করেন ৩০০ টাকা। তার এ কাজ বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply