সেতু-স্কুল ভেঙে মালামাল চুরি, খাগড়াছড়িতে আ’লীগ নেতার কর্মকাণ্ডে বিব্রত নেতাকর্মীরাই

|

সেতু ভেঙে রড আর স্কুল ভবন ভেঙে মালামাল চুরিসহ আওয়ামী লীগ নেতা উত্তম কুমার দেবের একের পর এক অপকর্মের ঘটনায় তোলপাড় চলছে খাগড়াছড়িতে। বিব্রত দলটির নেতাকর্মীরাও। কারাগারে গেলেও তাকে নিয়ে আলোচনা থামেনি এখনও। ঠিকাদারি কাজে অনিয়ম আর কাজ না করেই বিল উত্তোলনসহ বহু অভিযোগ উঠে আসছে তার বিরুদ্ধে।

খাগড়াছড়ির পানছড়ি এবং চেঙ্গি ইউনিয়নে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নির্মিত হয় ৩টি সেতু এবং কালভার্ট। পরে সীমান্ত সড়ক চালু হওয়ায় এসব পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্থানীয় ঠিকাদার এবং পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দেবের নিয়োজিত শ্রমিকরা সেতু ভেঙে রড খুলে নিয়ে গেলে তোলপাড় সৃষ্টি। এ ঘটনায় মামলার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, দরপত্র ছাড়াই চারটি সরকারি স্কুল ভবন ভেঙে মালামাল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্কুল ভাঙা নিয়ে আলোচনা হলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তই হয়নি। তবুও এগুলো ভেঙে মালামাল নিয়ে গেছে। আর এর পেছনে ঠিকাদারের পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরও হাত আছে বলে দাবি তাদের।

ঠিকাদারের এসব অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক। পানছড়ি মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবীর মিলন বলেন, কোনো ঠিকাদার বা রাজনীতিকের সাথে আমার কোনো সংযোগ নেই।

এদিকে, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, কাজ না করে বিল উত্তোলন, প্রকল্প ঝুলিয়ে রাখাসহ আওয়ামী লীগ নেতার নানা কর্মকাণ্ডে বিপাকে এলজিইডি এবং সরকারি বিভিন্ন দফতর। এ নিয়ে পানছড়ি এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল খালেক বলেন, উনি হয়তো ১০ টাকার কাজ করে ১০ টাকার বিলই দিয়েছে। সেই টাকা তোলার পর কাজের কোনো খোঁজ নেই। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সময় নষ্ট হয়েছে।

যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের এসব অপকর্মে বিব্রত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। পানছড়ি আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ব্রিজ, কালভার্ট বা স্কুলের মতো স্থাপনাগুলো সে তার বাহিনী দিয়ে ভেঙে মালামাল নিয়ে যায়। কিছু রেখে দেয় আর কিছু নিজে ব্যবহার করে। তার এ কর্মকাণ্ডে আমরা আসলেই বিব্রত।

অভিযুক্ত উত্তম কুমার দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জয়নাথ দেব বলেন, আমরা তার বিরুদ্ধে জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু হয়তো কোনো অদৃশ্য কারণে এখনও এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply