কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি

|

রিমন রহমান:

কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি। লক্ষ্যের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রফতানি হয়েছে কম। মূলত, পরিবেশ সম্মত উৎপাদন ব্যবস্থা না থাকাতেই এ সংকট। পাঁচ বছর আগে হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরিত হয় চামড়া শিল্প নগরী। কিন্তু, সরকারের উদাসীনতায় এখনও গড়ে তোলা যায়নি পরিবেশ সম্মত উৎপাদন ব্যবস্থা। বলা হচ্ছে, লক্ষ্য স্থির করে তা বাস্তবায়নে কৌশল হাতে নেয়া না গেলে বিশ্ব বাজার থেকে ছিটকে পড়বে বাংলাদেশ।

তৈরী পোশাক খাতের পর চামড়াই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি পণ্য। কিন্তু, অর্থের বিবেচনায় এই দুই পণ্যের রফতানি আয়ে ব্যবধান আকাশ-পাতাল। চামড়া বর্ষ ঘোষণা কিংবা পৃথক চামড়া শিল্প নগরী স্থাপন- কোনো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।

কাঙ্খিত মাত্রায় এগুচ্ছে না চামড়া খাত। রফতানির চিত্র হতাশাজনক। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হয়েছে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ও চামড়ার জুতা রফতানি। শুধু লক্ষ্যের তুলনায়ই নয়, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও কম হয়েছে রফতানি আয়।

এ প্রসঙ্গে স্টেপ ফুটওয়্যারের সিইও আমিনুল ইসলাম শামীম বলেন, এখন খামার মানেই হলো গরু মোটাতাজাকরন। এ সময় তারা শুধু গরুকে মোটাতাজাই করতে চায়। আর এ কারণে চামড়া লুজ হওয়া বেড়ে যায়। ভাল সু বানাতে গেলে দেখা যায় যে ২০ বা ৩০ শতাংশ চামড়াও পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে এটা আর ইকোনমিকালি ভায়াবল থাকছে না। সেটাও যদি করতে পারতাম তাহলে চামড়ার দামটা একটু বাড়তো।

মূলত, পরিবেশ সম্মত উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠার কারণেই চামড়াখাতের এ দুর্দশা। সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা সিইটিপি। উন্মুত্ত স্থানে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। চামড়া উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত পানি। বলা যায়, পরিপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরির ক্ষেত্রেও নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয়- একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে কেটে যাচ্ছে দিন-মাস-বছর। ফলাফল বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বিশ্বের নামি-দামি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান।

স্টেপ ফুটওয়্যারের সিইও আমিনুল ইসলাম শামীম আরও বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই পরিমাণ টাকা ইনভেস্ট করে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট করলাম এটা তার লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সর্বশেষ যে, একটা প্রতিষ্ঠানকে ডেভেলপ করা, স্টাফদের ট্রেনিং দেয়া, মডেল ফ্যাক্টরি স্থাপন করা ইত্যাদি নিয়ে কেউই ভাবছে না।

সুনিদিষ্ট কর্মপরিকল্পনার বাইরে চলে গেল চামড়া খাত। স্থানীয় পর্যায় থেকে তৈরি করা যাচ্ছে না দক্ষ মানবসম্পদ। উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত না করায় সৃষ্টি হচ্ছে না উদ্যোক্তা।

ভূলুয়া ট্যানারির চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল নান্নু বলেন, আমাদের সিইটিপি এখনও ঠিক নাই। আর ইউরোপের মার্কেটও এহকন অনেক টাইট হয়ে গেছে। ওখানে মাল বিক্রি করা খুবই কঠিন এখন। আমরা এখন শুধুমাত্র চীন নির্ভর।

বিশ্বে বাংলাদেশি চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্যের বাজার দখলে পরিবেশ সম্মত উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply