সমুদ্র থেকে পাইপলাইনে তেল খালাসের যুগে বাংলাদেশ

|

ছবি: সংগৃহীত

উন্নত অনেক দেশকে টেক্কা দিয়ে গভীর সমুদ্র থেকে পাইপলাইনে তেল খালাসের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। সৌদি আরব থেকে আনা ৮২ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড অয়েলের পরীক্ষামূলক খালাস কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে এই অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ।

রোববার (২ জুলাই) দুপুরে পাইপলাইনে তেল খালাস কার্যক্রম শুরু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। তিনি জানান, সৌদি আরব থেকে আনা ৮২ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড অয়েলের পরীক্ষামূলক খালাস শুরু হয়েছে গভীর বঙ্গোপসাগরে। ১১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন দিয়ে এই তেল আসবে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। ৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কারণে তেল খালাসের সিস্টেম লস ও খরচ কমার পাশাপাশি সময় ২৫ দিন কমে মাত্র ২ দিনে নেমে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে বর্তমানে ৫ লাখ টন সংরক্ষণ ক্ষমতা আছে। এর মধ্যে ক্রুড অয়েল সংরক্ষণ ক্ষমতা দুই লাখ ২৫ হাজার টন। বাকিটা পরিশোধিত তেল রাখার স্টোরেজ। ইস্টার্ন রিফাইনারি বছরে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করতে সক্ষম। সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন (এসপিএম) প্রকল্প প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় ইউনিট। এটি চালু হলে পরিশোধন ক্ষমতা ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হবে। বর্তমানে দেশে সরকারিভাবে সমুদ্রপথে ৬০ লাখ টনেরও বেশি জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়। এছাড়া বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফার্নেস তেলসহ প্রায় এক কোটি টন তেলের প্রয়োজন হয়।

প্রকল্পের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে উপকূল থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) স্থাপন করা হয়েছে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল আনলোডিং করা হবে। ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেই পাইপলাইন প্রথমে নিয়ে আসা হবে কালারমারছড়ায় সিএসটিএফ বা পাম্প স্টেশন অ্যান্ড ট্যাঙ্ক ফার্মে। সেখান থেকে বিভিন্ন পাম্পের মাধ্যমে ৭৪ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল চলে যাবে আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূলে। সেখান থেকে আবার ৩৬ কিলোমিটার পাইপলাইন পাড়ি দিয়ে তেল নিয়ে যাওয়া হবে পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে পাইপলাইন বসানোর প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ৪ হাজার ৯৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ইতোমধ্যেই প্রকল্পের মেয়াদ তিনবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে। এর মধ্যে চার হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে চীন সরকার।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply