সাগরজলে রানওয়ে: চলতি বছরই ওঠানামা করবে বিমান

|

মনিরুল ইসলাম, কক্সবাজার থেকে ফিরে :

বিমান যখন মাটিতে নামবে, তখন উপর থেকে যাত্রীদের মনে হবে সাগরের মধ্যেই অবতরণ করছেন সবাই। এমন অনুভূতি দেয়া বিমানবন্দর বিশ্বে খুব কম আছে। সমুদ্র সৈকতময় রানওয়ের সেই স্বপ্ন দেশে এখন দৃশ্যমান। এ বছরের মধ্যেই কক্সবাজারে বিমান উড়বে সাগরের ভেতরের রানওয়ে দিয়ে। প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ প্রায় শেষ। এই রানওয়ের কাজ শেষ হলে এটি হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে।

কক্সবাজার এয়ারপোর্টকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করতে ২০১২ সালে পরিকল্পনা নেয় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। সেই মাস্টারপ্ল্যানে প্রথম ও প্রধান কাজ রানওয়ে ও টার্মিনাল সম্প্রসারণ। দুইটিরই কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড পায় রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ। বিপরীত দিকে জায়গা না থাকা এবং দৃষ্টিনন্দন একটি রানওয়ে করার পরিকল্পনায় সমুদ্র সৈকতের ভেতরেই রানওয়ে করার সিদ্ধান্ত হয়। শুধু রানওয়ের জন্যই খরচ হচ্ছে প্রায় ১৯শ’ কোটি টাকা। সমুদ্রপাড়ে জমি উঁচু করে ঢেউ থেকে বন্দর সুরক্ষায় বিশাল বিশাল কংক্রিট বাঁধ ফেলে একটু একটু করে এখন প্রায় প্রস্তুত বর্ধিত রানওয়ে।

কক্সবাজার রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক লি গুয়াংচি বলেন, সাগরের পানি নিষ্কাশন করে সেখানে জমির উন্নয়ন, বাঁধ বানানো, সেগুলোর সুরক্ষা, সীমানা প্রাচীর, সাগর তীরে রানওয়ের ফুটপাত নির্মাণ ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এরমধ্যে বড় বাধা হয়ে আসে করোনা দুর্যোগ। সবকিছু ছাপিয়ে সময়সীমার আগে কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের বর্তমান রানওয়ের দৈর্ঘ্য ২.৭৪ কিলোমিটার; এটি বাড়ানো হচ্ছে আধা কিলোমিটারের বেশি। মোট দৈর্ঘ্য হবে ৩.২ কিলোমিটার। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও ২০০ ফুট বড় হবে এই রানওয়ে। এখন রানওয়ে ছোট হওয়ায় বোয়িংসহ বড় বিমান ওঠানামা করতে পারে না এখানে।

কক্সবাজার রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর মোশাররফ হোসেন বললেন, সমুদ্রে যে মোহনা, সেটি ভরাট করে আমরা রানওয়ে করছি। বিমান যখন ল্যান্ড করবে, তখন নান্দনিক একটা ভিউ পাওয়া যাবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চীনা কোম্পানি চাইছে, এ বছরের সেপ্টেম্বরে সব কাজ শেষ করতে। যাতে ডিসেম্বরের মধ্যেই বিমান ওঠানামা করতে পারে সাগরিকার রানওয়ে দিয়ে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply