শৈলকুপায় স্বামীর দেয়া আগুনে ঝলসে গেল স্ত্রীর শরীর

|

ভুক্তভোগী গৃহবধূ ঋতু।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১৫ তারিখ দুপুর থেকে আগুনে পোড়া ক্ষত নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ঋতু (১৮) নামে এক নারী। সংসার ভাঙার ভয়ে এতদিন কাউকে কিছুই বলেনি ঋতু। দিনের পর দিন ক্ষত ড্রেসিং করার একপর্যায়ে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা জানাজানি হয়।

আহত ঋতুর বাড়ি একই উপজেলার ছোট ধল্লা গ্রামে। স্বামী জিল্লুর রহমানের বাড়িও একই গ্রামে।

ঋতু ও তার মায়ের কাছ থেকে খবর নিয়ে জানা যায়, তিন মাস আগে ছোট ধল্লা গ্রামের ফুপাতো ভাই জিল্লুর রহমানের সাথে বিবাহ হয় ঋতুর। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে ঋতুর ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে স্বামী জিল্লুর রহমান।

ঋতু বলেন, গত ১৪ তারিখ রাতে টিভিতে লটারি খেলা দেখে বাড়িতে আসার পর রাত আনুমানিক ১২টার সময় স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে স্বামী জিল্লুর রহমান গ্যাস লাইট দিয়ে তার জামাই আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ঋতুর চিৎকারে সবাই চলে আসলে স্বামী জিল্লুর রহমান পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে, ঋতু এত কিছুর পরও তার স্বামীর সংসার করার জন্য এতো দিন ভয়ে মুখ খুলেনি। বুধবার হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় ডাক্তার, নার্স ও ঋতুর মায়ের কাছে ঋতু বলেন তার স্বামী আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে তাকে। গত ১৩ দিন ধরে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিলেও স্বামী একদিনের জন্যে খোঁজ নিতে হাসপাতালে আসেনি। ঋতুর শাশুড়ি দুইদিন আসলেও অল্প সময় পর বাড়িতে চলে গেছে। তার পর সেও কোন খোঁজ খবর নেই না।

শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ডাক্তার সুজায়েত হোসেন বলেন, তার বুকের দুই পাশে ও উপরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ঋতুর সুস্থ হতে এখনো সময় লাগবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্তের স্বামী জিল্লুর রহমান ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কাওকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রথম দিকে জিল্লুর রহমান গ্রামবাসীদের নিকট বলেছিলেন যে ঋতু নিজের শরীর নিজেই পুড়িয়েছে।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply