সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
জহুরা খাতুন (৭০) বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউপির ডলুরা গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলীর স্ত্রী। প্রায় ৭ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। স্বামী হারানোর পর ৫ ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের মা হয়েও শান্তিতে বসবাস করতে পারছেন না। মুক্তিযোদ্ধা স্বামী হযরত আলীর সরকারি সম্মানী ভাতাই এখন তার ‘কাল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ভাষায় ‘স্বামীর সম্মানী ভাতার টাকা নিয়েই এখন আমার কপাল মন্দ। এই বয়সে দুইবার ছেলেদের হাতে মার খেয়েছি।’
নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়াত স্বামীর সরকারি সম্মানী ভাতার জন্য চার ছেলে নানা ভাবে তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করছিল। সরকারি ভাতা তাদের দিয়ে দেয়ার জন্যও তারা নানাভাবে হুমকি ও চাপ দিচ্ছিল। এর জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে ছেলে আয়াতুউল্লাহ (৪৭) আব্দুল্লাহ (৪০), মস্তফা মিয়া (৩৪), হানিফা (৩৭) আড়াইটার গ্রামের ডলুরা চাইল্ড কেয়ার কিন্ডারগার্টেনে সামনে তাকে মারধর করে।
এক পর্যায়ে ছেলেদের মারধর থেকে বাঁচতে কিন্ডারগার্টেনে ঢুকে পড়েন তিনি। সেখানেও তাকে তারা মারধর করে। এসময় মাকে বাঁচাতে ছোট ছেলে মোজাফ্ফর মিয়া (২৯) ও মেয়ের ঘরের নাতি আব্দুল মজিদ (২৩) আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করে তারা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন।
বৃদ্ধা জানান, এর আগেও তিনি এবিষয়ে বাদী হয়ে বিশ্বম্ভরপুর থানায় একটি পিটিশন দায়ের করেন। সেটি মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় গন্য ব্যক্তিবর্গ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
তবে স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধার ছেলেরা মিলে গ্রামে একটি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল খুলেছিল, পরে স্কুলের মালিকানা নিয়ে ভাইদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। কিন্ডারগার্ডেনের মালিকানা নিয়ে বড় চার ভাই তাদের সবার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। ছোট ছেলে মোজাফফর মিয়ার পক্ষ নেন বৃদ্ধা জহুরা খাতুন। এনিয়ে চার ছেলে মায়ের উপর কিছুটা ক্ষুব্ধ ছিল।
বৃদ্ধার মেয়ে মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ভাইরা মিলে মাকে মেরেছে, আমি এর বিচার চাই।
বিশ্বম্ভরপুর থানার এসআই শরিফুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধার ছেলেরা মারামারি করেছে শুনেছি, তিনি আহত হয়েছেন কিনা জানি না। থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply