ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: রাবি ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার

|

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়সহ চারজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থি, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে মুশফিক তাহমিদ তন্ময় (সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাবি শাখা), রাজু আহমেদ (যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হল শাখা, রাবি), মহিবুল মমিন সনেট (কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা, রাবি) ও শাকোয়ান সিদ্দিক প্রাঙ্গণ (কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হল শাখা, রাবি)-কে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে, ‘প্রক্সি চুক্তি’ এর টাকা আদায় করতে শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাবি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে জালিয়াতি অভিযোগে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত চার জনই ওই মামলার আসামি।

এছাড়া, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে তন্ময়কে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল ছাত্রলীগ। পরে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রক্সি চক্রের একটি গ্রুপের সঙ্গে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা চুক্তি করেন আহসান হাবীব নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা নগদ এবং ৬০ হাজার টাকার চেক পরিশোধ করেন তিনি। ভর্তির পরে বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভর্তি শেষে বাকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে আটকে রেখে শিক্ষার্থীর বাবার কাছে আরও তিন লাখ টাকা দাবি করে ওই প্রক্সি চক্র। তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, আহসান হাবীব পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য তার মায়ের সঙ্গে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞান ভবনে আসেন। ভর্তি হওয়ার পর ওই ভবন থেকে বের হলে দুপুর পৌনে ৩টায় অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন ব্যক্তি তাকে কৌশলে অপহরণ করে। শের-ই-বাংলা আবাসিক হলের ৩য় তলায় নিয়ে আটকে রাখে তাকে। সেখানে অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর বাবার কাছে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে গুম করার হুমকিও দেয়া হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডির লোকজনের সহায়তায় বিকেল সাড়ে ৫টায় শের-ই-বাংলা হলের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আহসান হাবীব স্বীকার করেন, নিজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে প্রক্সি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান তিনি। তবে তার প্রক্সি পরীক্ষা কোন পরীক্ষার্থী দিয়েছে তা জানাতে পারেননি।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply