লিওনেল মেসি যোগ দেয়ার আগে ইন্টার মায়ামি ছিল এমএলএস’র পয়েন্ট টেবিলের সর্বশেষ দল, যাকে তলানির দল বললেই চেনা সহজ হয়। আরেকবার পড়ে নিতে পারেন, তলানির দল। মাস দুয়েক জুড়ে ইন্টার মায়ামির নাম অনেকবার শুনে ফেলা হয়েছে বলে মেজর লিগ সকারের পয়েন্ট টেবিলের সবচেয়ে নিচের ক্লাব হিসেবে এই নাম বিশ্বাস করতে কষ্ট হতেই পারে। কারণ, শীর্ষ পাঁচ ক্লাবের নামও যে গত কয়েকদিনে অনেক মানুষ চিনে ফেলতে পারেনি।
সেখানে ডেভিড বেকহ্যামের মালিকানাধীন ইন্টার মায়ামি শীর্ষ দশেও ছিল না। নিজেদের ইতিহাসে কোনো শিরোপাও নেই তাদের। মেসি আসার আগে ২২ ম্যাচে ছিল মাত্র ৫টি জয়, সর্বসাকুল্যে ১৮ পয়েন্ট। জর্দি আলবা ও সার্জিও বুসকেটসের সাথে যোগ দিলেন লিওনেল মেসি। কিংবা বলা ভালো, মেসির পথ অনুসরণ করে এলেন তার দুই সাবেক বার্সা সতীর্থ। এক মাসের মধ্যেই ইন্টার মায়ামিকে মেসি জেতালেন লিগস কাপ শিরোপা; ক্লাবের ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোনো ট্রফি!
এই সময়ে মেসি খেলেছেন ৭ ম্যাচ, গোল করেছেন ১০টি! প্রতি ম্যাচেই যেখানে গোল ছিল তার পায়ে, ফাইনালের মাধুকরী মঞ্চে তার জাদুকরী বাম পা রীতি অনুসারেই ঝলসে উঠলো আরও একবার। ডি বক্সের ঠিক বাইরে বল পেলেন মেসি। ন্যাশভিলের হোম গ্রাউন্ড জিওডিস পার্কে দৃশ্যমান হলো ইন্দ্রপুরীর আশ্চর্য! মেসির বাম পা থেকে সৃষ্টি হলো রংধনু; সূর্য নয়, সেটা ফুটবলের যাত্রাপথে।
শেষমেশ ম্যারাথন এক টাইব্রেকারের পর ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা উৎসব করলো ইন্টার মায়ামি। গ্যালারি থেকে শূন্যে হাত ছুঁড়ে উদযাপন করলেন ডেভিড বেকহাম। তার চোখে আনন্দাশ্রু। কিছুটা কি অবিশ্বাসেরও? ইন্টার মায়ামির লিগস কাপ জয়ের মাহাত্ম্য বুঝতে একটু কল্পনা করুন, এলচে জিতেছে লা লিগা কিংবা, গত বছর প্রিমিয়ার লিগের রেলিগেশন কোনোমতে এড়ানো নটিংহাম ফরেস্ট জয় করেছে এবারের ইংলিশ লিগ!
‘গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ বা গোট বিতর্ক অনেকের কাছেই শেষ হয়ে গেছে ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর, লুসাইলে। ইন্টার মায়ামির রূপান্তর দেখে হাল আমলে প্রচলিত ‘গোট এফেক্ট’ বা সর্বকালের সেরা ফুটবলারের প্রভাব নিয়ে ভাবতে পারেন এখন অনেকেই। প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেতে কষ্ট করতে হবে না। কেবল মাস দুয়েকের ঘটনাবলি অনুসরণ করলেই হবে। স্পষ্টভাবেই ভাগ হয়ে গেছে ‘মেসি-যুগ’ ও ‘প্রাক মেসি যুগ’। যুক্তরাষ্ট্রেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রোর অত্যুঙ্গস্পর্শী প্রভাব। ‘গোট এফেক্ট’ না হলে এর নাম কি?
আরও পড়ুন: মেসির হাত ধরে ইন্টার মায়ামির প্রথম শিরোপা
/এম ই
Leave a reply