স্কুলে এক মুসলিম শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভারতে। দেশটির উত্তর প্রদেশের মুজাফফর নগরের এক শিক্ষকের নির্দেশে ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা একে একে এসে থাপ্পড় দেয় আট বছরের ওই শিশুকে। এর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিও। খবর হিন্দুস্তার টাইমসের।
গত বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের মুজাফফর নগরের নেহা পাবলিক স্কুলে ঘটে এই ঘটনা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, আট বছর বয়সী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলতামাসকে পেটানোর নির্দেশ দিচ্ছেন শিক্ষক তৃপ্ত ত্যাগি। এরপর একে একে শিক্ষার্থীরা থাপ্পড় মারে ওই আলতামাসকে।
ভিডিওতে ওই শিক্ষককে বলতে শোনা গেছে, আমি তো আগেই বলেছি, মুসলিম বাচ্চারা এখান থেকে চলে যাও। মুসলিম মায়েরা তাদের সন্তানদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ দেন না। ফলে ছেলে-মেয়েরা সহজেই নষ্ট হয়ে যায়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন
পরিবারের অভিযোগ, মুসলিম হওয়ার কারণে নিগ্রহের শিকার হন ওই স্কুল শিক্ষার্থী। তবে মামলা করতে চান না ভুক্তভোগীর পরিবার। ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমার ছেলেকে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। তবে এ নিয়ে কোনো মামলা করতে চাই না। স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সমঝোতা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, সমঝোতা হয়েছে যে, আমি মামলা-মোকদ্দমা করবো না। ছেলেকে ওই স্কুলে আর পাঠাবো না এবং তারা স্কুলের ফি ফেরত দেবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবার বক্তব্য দেখতে এখানে ক্লিক করুন
এদিকে, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনীতিকরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় শিশুদের মাঝে বিভাজনের মনোভাব ছড়িয়ে পড়বে। স্কুলের মতো পবিত্র একটি স্থানকে সাম্প্রদায়িক ঘৃণ্যা তৈরির কারখানায় পরিণত করা হয়েছে। শিক্ষক হিসেবে সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ করেছেন ওই শিক্ষিকা। নিন্দা জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি ও সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদবও।
এ নিয়ে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে মুজাফফরনগরের পুলিশ সুপার (শহর) সত্যনারায়ণ প্রজাপত বলেন, ভিডিওটি আমলে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনা স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসজেড/
Leave a reply