চার দশক পর অবশেষে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে পেরুর ‘লজ্জার প্রাচীর’

|

সমাজে ধনী-গরিবের বিভাজন যুগ যুগান্তরের। যদিও দুই শ্রেণির সেই বিভাজনে দৃশ্যমান কোনো সীমারেখা নেই। তবে পেরুতে রীতিমতো দেয়াল তৈরি করে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে ধনী-গরিবকে। যা ‘দ্যা ওয়াল অব শেম’ নামে পরিচিত। লিমা শহরে অবস্থিত চার দশক আগে নির্মিত সেই দেয়াল এবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্সের।

৮০’র দশকে সিমেন্ট, পাথর আর কাঁটাতার দিয়ে তৈরি করা হয় বিভাজনের এই দেয়ার ‘দ্যা ওয়াল অব শেম’ বা লজ্জার প্রাচীর। চার দশকের আইনি লড়াই শেষে সেই লজ্জা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে লাতিন দেশটি। এরই মধ্যে ভাঙা শুরু হয়েছে ধনী-গরিবকে আলাদা করে রাখা প্রাচীরটি।

লা ফ্লোরিডা দে ভিলা মারিয়া দেল ত্রিউনফোর প্রেসিডেন্ট জুলিও সিজার ক্যারিওন বলেন, এটি চরম বৈষম্যমূলক। আমরা পেরুভিয়ানরা মনে করি সবাই এক। একটি প্রাচীর দিয়ে আমাদের বিভক্ত করা হয়েছে। আমাদের এমন মনে হয়েছিল যেন আমরা অন্য দেশে ছিলাম। অন্য কোনো দেশে এমন নজির নেই। এটি দুর্ভাগ্যজনক। তবে কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় এখন দেয়ালটি তুলে নেয়া হচ্ছে।

মাওবাদীদের উত্থানে নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে লিমার লা মোলিনা জেলায় এই প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয় আশির দশকে। তিন মিটার উচ্চতার এই দেয়ালটির দৈর্ঘ্য সাড়ে চার কিলোমিটার। দেয়ালের একপাশে বাস উঁচু শ্রেণির, যেখানে বিলাসবহুল বাড়ি, সুইমিংপুলসহ রয়েছে আধুনিক নানা সুযোগ-সুবিধা। অন্যপাশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, যারা ন্যূনতম মৌলিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত।

দেশটির সাংবিধানিক আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট গুস্তাভো গুতিরেজ বলেন, সাংবিধানিক আদালতের রায় প্রমাণ করে, দেয়ালটি অসাংবিধানিক। লা মেলিনা পৌরসভার কর্মীরা সেটি অপসারণ শুরু করেছে। প্রতিবেশীদের মাঝে এমন বিভাজনের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়। এটি দুটি গোষ্ঠীকে সামাজিকভাবে পৃথক করে দেয়।

পেরুর বাসিন্দারা বলছেন, এই বিভাজন রেখা মুছে ফেলার মধ্য দিয়ে কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে দেশটি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply