সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা হলো পেট ও বুক জোড়া লাগানো আড়াই মাস বয়সী দুই শিশু আবু বকর ও ওমর ফারুক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থায়নে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে আবু বকর ও ওমর ফারুক নামের ৭৮ দিন বয়সী এই শিশুদের সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৪ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের চায়না বেগম এবং আল আমিন শেখ দম্পতির ঘরে পেটে জোড়া লাগা এ দুই নবজাতক জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর শরীরে জটিলতা দেখা দিলে ৫ জুলাই তাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম জাহিদ হোসেনের অধীনে ২০১ নং কেবিনে ভর্তি করা হয়। পেটে জোড়া লাগানো যমজ এ দুই নবজাতকের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্বভার নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল আবু বকর ও ওমর ফারুকের নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় (২০ সেপ্টেম্বর) তাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন।
শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. কে.এম. সাইফুল ইসলাম, মেডিক্যাল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা দিলশান মুনমুন, নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, এনেসথিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বণিক এবং নার্সিং ইনচার্জ মেহেরুন্নেসাসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা এ জটিল অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আবু বকর ও ওমর ফারুকের যকৃত ও বুকের হাড় সংযুক্ত ছিল। পোস্ট অপারেটিভে এ তারা শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত সংকটমুক্ত। শিশুদের মাতা-পিতা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল তাদের পূর্ণ সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
জটিল এই অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করায় সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও নার্সদের ধন্যবাদ প্রদান করেছেন বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের দেশের সার্জনরা এ ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে সক্ষম এবং এরকম জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। স্বল্প খরচে দেশের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধাতেই বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব।
Leave a reply