ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের বন্যা এতটা বিধ্বংসী হওয়ার কারণ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, গ্ল্যাসিয়ার লেক আউটবার্স্টই ছিল পাঁচ দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ এ বন্যার কারণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই ভূমিকা রেখেছে এই প্রলয়ংকারী বন্যার পেছনে। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও দুর্যোগের আশঙ্কাও করছেন তারা। খবর এনডিটিভির।
মূলত হিমবাহযুক্ত পর্বতমালা, যেমন হিমালয় কিংবা আল্পসের মাঝে সৃষ্ট ছোট ছোট লেক বা জলাধারগুলোকে বলা হয় গ্ল্যাসিয়ার লেক। মাত্রাতিরিক্ত হিমবাহ গলা, আকস্মিক ভারী বৃষ্টিপাত কিংবা হিমবাহ ধসে পড়লে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয় লেকের পানিতে। এক পর্যায়ে সামনে থাকা পাথরকেও ভাসিয়ে নিয়ে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে নিম্নাঞ্চলের দিকে। যা সুনামির সমান চাপ সৃষ্টি করে তাণ্ডবলীলা চালায়। পানির এই ভয়াবহ প্রবাহই গ্ল্যাসিয়ার লেক আউটবার্স্ট নামে পরিচিত। গবেষকরা বলছেন, এটিই হয়েছে সিকিমের প্রলয়ংকারী বন্যার ক্ষেত্রে।
এমন পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে হিমবাহ গলতে শুরু করেছে। যা ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগের শঙ্কা আরও বাড়াচ্ছে।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
হিমালয়া ইউনিভার্সিটি কনসর্টিয়ামের পর্বত বিশেষজ্ঞ জ্যাকোব স্টিনার বলেন, সিকিমে গ্ল্যাসিয়ার লেক আউটবার্স্টে পানির সাথে কাদামাটি এবং পাথরও ভেসে গেছে। যা সু্নামির মতো ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছে। হিমালয়ের পূর্বাঞ্চল বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হটস্পট হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিমবাহ গলছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। এতে আরও অনেক গ্ল্যাসিয়ার লেক তৈরি হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগের ঝুঁকি আরও অনেক গুণ বাড়ছে।
গ্ল্যাসিয়ার লেক আউটবার্স্ট কখন হবে তা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। সতর্কতা জারিরও কোনো সুযোগ নেই। তাই জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অতি দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসজেড/
Leave a reply